
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. রুবেল আনসারের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত প্রশ্ন, অশালীন প্রস্তাব, একান্ত সাক্ষাতের চাপ এবং যৌন সম্পর্কের ইঙ্গিত দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এক ছাত্রী। গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতির কাছে তিনি লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতি মোছা. তাসলিমা খাতুন অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার প্রধান তিনি নিজেই।
অভিযোগপত্রে ছাত্রী উল্লেখ করেন, দুর্ঘটনায় হাত আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় সময়মতো অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে না পারায় শিক্ষক রুবেল আনসারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। কথা বলার এক পর্যায়ে শিক্ষক বলেন, “তোমার হাত যদি পরীক্ষার আগে ঠিক না হয়, আমি ফুঁ দিয়ে ঠিক করে দেব”—এবং খুলনায় নতুন হওয়ায় কোথাও ঘুরতে বা হাসপাতালে যেতে হলে জানানোর পরামর্শ দেন।
পরে শিক্ষক ঘন ঘন মেসেজ দিয়ে একান্তে দেখা করার প্রস্তাব দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “আমি তোমাদের বাসায় গিয়ে আমার কথা রেখেছি, এবার তোমাকে আমার কথা রাখতে হবে। একজন পুরুষ একজন নারীকে যেভাবে চায়, আমিও তোমাকে সেভাবে চাই। তুমি ভয় পেয়ো না, তোমাকে একা একটি পরিচিত বাসায় নিয়ে যাব, যেখানে কেউ থাকবে না।”
ছাত্রী অভিযোগ করেন, তিনি আপত্তি জানালে শিক্ষক গাড়িতে থাকা অবস্থায় তার হাত চেপে ধরে বলেন, “আমি যা চাই তাই আমার করে নিই। আজ না হোক কাল আমার ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দেবই। তোমার রেজাল্টও বাড়িয়ে দেব, ৩.৫০ হয়ে যাবে।” পরে তিনি কোনোভাবে গাড়ি থেকে নেমে আত্মরক্ষা করেন।
ভুক্তভোগী জানান, ঘটনাটি তাকে মানসিকভাবে ভেঙে দেয় এবং দীর্ঘদিন ভয় ও কষ্টে ক্লাস করতে হয়। পূর্বেও ওই শিক্ষক অনুরূপ অভিযোগের মুখে পড়েছেন বলে তিনি শোনেন। ৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির ঘোষণায় সাহস পেয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. নাজমুস সাদাত বলেন, “অভিযোগ তদন্তাধীন আছে। আমি তদন্ত কমিটির সদস্য হওয়ায় এর বেশি মন্তব্য করতে পারছি না।”
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রফেসর ড. রুবেল আনসার বলেন, “এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। সব শিক্ষার্থীই আমার কাছে সমান।”
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর