
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের ডিপিপি অনুমোদন ও পূর্ণবাস্তবায়নের দাবিতে প্রায় ছয় ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ করে রেখেছিল রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বৃষ্টিতে ভিজে শিক্ষার্থীরা উল্লাপাড়া রেলস্টেশনের উত্তরপার্শ্বে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। অবরোধ শেষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচত্বর ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। অবরোধ চলাকালে স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়নসহ পরিবেশ উপদেষ্টা রেজওয়ানা হাসানকে ব্যঙ্গ করে নানা ধরনের স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে অবরোধের কারণে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। উল্লাপাড়া স্টেশনের দুপাশে ধূমকেতু, সিল্কসিটি ও চিলাহাটিসহ অন্তত ৭-৮টি যাত্রীবাহী ট্রেন আটকা পড়ে। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
আন্দোলনকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘ নয় বছর আগে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে ভাড়া ভবনে। এতে ক্লাসরুম, আবাসন, ছাত্রী হলরুম, শিক্ষার পরিবেশ, ছাত্রী নিরাপত্তা, পাঠাগার ও খেলার মাঠ সংকটসহ নানা সমস্যায় ভুগছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। নয় বছরে আটবার ডিপিপি সংশোধন করে একনেকে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনোটিই অনুমোদন না হওয়ায় ২০২৪ সালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে সরকার পক্ষ থেকে বাজেট কমিয়ে ডিপিপি জমা দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিনরাত পরিশ্রম করে সর্বশেষ পাঁচশত উনিশ কোটি বাজেট রেখে ডিপিপি জমা দেন। কিছুদিন আগে একনেক সভায় পরিবেশ উপদেষ্টা রেজওয়ানা হাসান স্থায়ী ক্যাম্পাসের জায়গা পরিদর্শনপূর্বক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। পরবর্তীতে উপদেষ্টা রেজওয়ানা হাসান মাসখানেক আগে জায়গা পরিদর্শন করেন এবং পরিবেশ নষ্ট হবে বলে প্রতিবেদন জমা দেন। এ কারণে ডিপিপি আটকে যায়। এ অবস্থায় গত ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবস বর্জন করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। ১৬ দিনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কে অবরোধ করে পথনাটক, নবীন বরণ, সেমিনার এবং প্রতীকী ক্লাস পরিচালনা করেছেন। এরপরও দাবি পূরণ না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার হাটিকুমরুল গোলচত্বরে মানববন্ধন এবং রবিবারে মহাসড়ক অবরোধ করেন। ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ দুই ঘণ্টা বন্ধ ছিল। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা রেলপথ অবরোধ করেন। এতে প্রায় ছয় ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা জানান, সকাল থেকে উল্লাপাড়া স্টেশনে ট্রেন না আসায় তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এতে তাদের চরম দুর্ভোগ ও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। অনেকে দুই-তিন ঘণ্টা বসে থেকে বাড়ি চলে গেছেন।
স্টেশন মাস্টার মনিরুল ইসলাম জানান, ঢাকাগামী ট্রেনগুলো লাহিড়ী মোহনপুর ও উত্তরগামী ট্রেনগুলো জামতৈল ও সেতুর পশ্চিমপাড়সহ কয়েকটি স্টেশনে ছয় ঘণ্টা আটকে ছিল। এতে একদিকে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে অন্যদিকে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর