
ব্র্যাক ব্যাংকের স্মার্ট ব্যাংকিং অ্যাপ ‘আস্থা’ সম্প্রতি ১০ লাখ গ্রাহকসংখ্যার এক উল্লেখযোগ্য মাইলফক অর্জন করেছে, যা গ্রাহকদের মাঝে অ্যাপটির জনপ্রিয়তার প্রতিফলন। এই ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপটি গ্রাহকদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে, যা তাঁদের ২৪/৭ ব্যাংকিং লেনদেনের সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে।
অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকিং অ্যাপটি ২০২৫ সালের জুলাই মাসে ২০,০০০ কোটি টাকা লেনদেনের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এটি বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে মাসিক অ্যাপ-ভিত্তিক লেনদেনের এক নতুন রেকর্ড। ‘আস্থা’ অ্যাপ যে দেশের ডিজিটাল ব্যাংকিং অঙ্গনে নিরাপদ, স্মার্ট ও নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকিং সেবার মাধ্যম হিসেবে গ্রাহকদের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে, এটি তার-ই প্রতিফলন।
এই মাইলফলক শুধু গ্রাহকদের কাছে ‘আস্থা’র গ্রহণযোগ্যতাই নয়, বরং ডিজিটাল উদ্ভাবনে ব্র্যাক ব্যাংকের নেতৃত্বেরও প্রতিফলন। বাংলাদেশে ডিজিটাল আর্থিক সেবার বিকাশে ‘আস্থা’ গ্রাহকদের দিয়েছে তাঁদের আর্থিক ব্যবস্থাপনার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ, যেখানে তাঁরা যেকোনো সময় যেকোনো স্থান থেকে ব্যাংকিং লেনদেন করতে পারছেন।
‘আস্থা’ গ্রাহকদের এক প্ল্যাটফর্মেই ব্যাংকিং ও লাইফস্টাইলের বিস্তৃত সেবা দিচ্ছে। এখানে মাত্র কয়েক ট্যাপেই গ্রাহকরা ব্রাঞ্চে না গিয়ে ই-কেওয়াইসি (eKYC)-এর মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। অ্যাকাউন্ট নম্বর, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, অথবা ডিপিএস নম্বর দিয়ে সহজেই অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করা যায়, যার ফলে সব ধরনের ডিজিটাল জ্ঞানসম্পন্ন গ্রাহকরা কোনোপ্রকার ঝামেলা ছাড়াই অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করে ব্যাংকিং সেবা নিতে পারছেন। এটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিংয়ের প্রসারেও ভূমিকা রাখছে। শুধু তা-ই নয়, গ্রাহকরা এখানে কার্ড ও লোনের জন্য আবেদন থেকে শুরু করে এটিএম/ব্রাঞ্চ/মার্চেন্টের লোকেশনও জানতে পারেন খুব সহজে।
‘আস্থা’তে গ্রাহকরা নিজেদের সুবিধানুযায়ী এনপিএসবি, বিইএফটিএন, ভিসা ডিরেক্ট এবং আরটিজিএস ব্যবহার করে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। মোবাইল ওয়ালেট ফান্ড ট্রান্সফার, কিউআর কোড-ভিত্তিক ‘স্ক্যান অ্যান্ড পে’, ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট এবং মোবাইল রিচার্জ সুবিধাগুলো গ্রাহকদের জীবনকে করে তুলেছে আরও সহজ। এই সেবাগুলো পেতে গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে না কোনো চার্জ, দাঁড়াতে হচ্ছে না লাইনে, কিংবা যেতে হচ্ছে না কোনো ব্রাঞ্চে।
অ্যাপটিতে কোডের মাধ্যমে কার্ডবিহীন এটিএম উত্তোলন, স্ট্যান্ডিং ইনস্ট্রাকশনের মাধ্যমে নিয়মিত বিল প্রদান (যেমন- বিকাশ, রকেট, ইনস্যুরেন্স), বিকাশ পুল মানি ফিচারের মাধ্যমে ওয়ালেট থেকে ব্র্যাক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ক্রেডিট কার্ডে ফান্ড ট্রান্সফারের সুবিধা রয়েছে। গ্রাহকরা এই অ্যাপের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের লক্ষ্যে বেনিফিশিয়ারি ওনার (বিও) অ্যাকাউন্টও খুলতে পারেন।
ব্যাংকিং ও লাইফস্টাইলের অনন্য সমন্বয় আস্থা অ্যাপকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। ‘আস্থা’ লাইফস্টাইলের মাধ্যমে গ্রাহকরা বাসের টিকিট বুকিং, প্রথম আলোর ই-পেপার পড়া, ‘আস্থা প্লে’-তে কনটেন্ট স্ট্রিমিং, গান শোনা এবং ‘আস্থা লার্নিং’-এ দক্ষতা উন্নয়ন কোর্সে অংশ নিতে পারেন। আধ্যাত্মিক প্রশান্তির জন্য রয়েছে ‘আস্থা ইসলামিক’, যেখানে গ্রাহকরা নির্বাচিত ধর্মীয় কনটেন্ট উপভোগ করতে পারেন। এক প্ল্যাটফর্মে একসাথে ভ্যালু এবং সহজ ও নিরাপদ ব্যাংকিং সেবা ব্র্যাক ব্যাংকের গ্রাহককেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।
‘আস্থা’ গ্রাহকদের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক পরিকল্পনাতেও সহায়তা করে। গ্রাহকরা ‘আস্থা’ অ্যাপের মাধ্যমে এফডিআর/ডিপিএস খোলা বা ভাঙানো, কার্ড রিসেট বা ব্লক করা, নমিনির নাম আপডেট করা, অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট, ট্যাক্স সার্টিফিকেট ও পজিটিভ পে কনফার্মেশন ডাউনলোড করতে পারেন। এই সুবিধাগুলো বিশেষ করে এসএমই, পেশাজীবী এবং উদ্যোক্তাদের জন্য বেশ কার্যকর।
এই অর্জন ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি, আর্থিক ক্ষমতায়ন এবং উদ্ভাবনের ব্যাপারে ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। ‘আস্থা’র মাধ্যমে গ্রাহকরা শুধু আর্থিক লেনদেনই করছেন না, বরং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছেন। এমন অর্জন সম্পর্কে ব্র্যাক ব্যাংকের চিফ ডিজিটাল অফিসার মোকাররবিন মান্নান বলেন, “আস্থা ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল উদ্ভাবনের মাধ্যমে ব্যাংকিংকে সহজ ও সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।”
তিনির আরও বলেন, “১০ লাখেরও বেশি ব্যবহারকারীই প্রমাণ করে যে, অ্যাপটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। এটি এখন আর শুধু ব্যাংকিংয়েই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি এখন দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রসার, ব্যবহারকারীদের লাইফস্টাইল সুবিধা প্রদান এবং ভবিষ্যতের ডিজিটাল ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার বিষয় নিয়ে কাজ করছে।”
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
কৃষি, অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর