
গাজা সিটি দখলের মাধ্যমে পুরো উপত্যকা দখলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যাপক হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এতে গতকাল বৃহস্পতিবার এক দিনে ১২৩ জন নিহত হয়েছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে এক দিনে এটি সর্বোচ্চ মৃত্যু। হামলার পাশাপাশি ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে অনাহারে প্রাণ গেছে আরও চারজনের। ত্রাণকে অস্ত্র না বানাতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বের শতাধিক সংস্থা।
গত ২২ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে অন্যত্র চলে যেতে বলছেন। ইসরায়েলের টেলিভিশন আইটোয়েন্টিফোর নিউজকে তিনি বলেন, তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না, বেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। যারা ফিলিস্তিনিদের জন্য উদ্বিগ্ন ও সাহায্য করতে আগ্রহী, তাদের সবার উচিত দরজা খুলে দেওয়া।’
রয়টার্স লিখেছে, আরব ও অনেক বিশ্বনেতা গাজার মানুষের এভাবে স্থানচ্যুত করার পরিকল্পনায় ‘বিস্মিত’। আর ফিলিস্তিনিরা বলছেন, এমনটা হলে তা হবে আরেকটি ‘নাকবা’ (বিপর্যয়)। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পর লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে বিতাড়ন করা হয়। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই গাজা সিটি দখলে সক্ষম হবেন। আলোচনা বারবার ব্যর্থ হলেও যুদ্ধবিরতি এখনও সম্ভব বলে জানান তারা।
গাজা সিটির বাসিন্দারা বলছেন, আইডিএফ বিমান ও ট্যাঙ্ক দিয়ে গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। জেইতুন ও শেজাইয়াপাড়ায় রাতভর অনেক বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছে। আল-আহলি হাসপাতাল জানিয়েছে, জেইতুনের একটি বাড়িতে বিমান হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। হামলা হয়েছে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বাংশেও। সেখানে ট্যাঙ্ক দিয়ে চালানো হামলায় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ধ্বংস হয়। মধ্য গাজায় দুটি পৃথক ঘটনায় ত্রাণকেন্দ্রে গুলিতে অন্তত ৯ ত্রাণপ্রত্যাশীর প্রাণ গেছে।
দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন জানায়, এ হামলা-দখলের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরে আরও তিন হাজার বসতি স্থাপনের অনুমতি দিয়েছেন ইসরায়েলের কট্টরপন্থি মন্ত্রী বেজালাল স্মোট্রিচ। প্রভাবশালী দেশগুলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণার মধ্যে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানালেন। এসব বসতির কারণে পশ্চিম তীর থেকে বাস্তুচ্যুতি আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর