
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির নামে বিভিন্ন ওষুধ, জেল ও ক্রীম প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে ‘নারিদের হরমন ও যৌবন +’ ক্যাপসুল, ‘লেডিস লুব্রিকেন্ট জেল’, ‘ফিমেল হট ক্রীম’সহ একাধিক পণ্য, যেগুলো যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও একান্ত মুহূর্তে পিচ্ছিলতা আনার দাবি করছে।
দারাজের ওয়েবসাইট ও অ্যাপ ঘেঁটে দেখা গেছে, এসব পণ্য ‘হেলথ অ্যান্ড বিউটি’, ‘ওম্যান কেয়ার’ এবং ‘পারসোনাল কেয়ার’ বিভাগে তালিকাভুক্ত। পণ্যের বিবরণে অশ্লীল ও যৌনতা উস্কে দেওয়ার মতো ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে—যেমন “মেয়েদের যৌনি অঞ্চল ভেজা রাখতে সহায়ক”, “সহবাসে ব্যথা দূর করে” ও “যৌবন ফিরিয়ে আনে” ইত্যাদি।
এছাড়া, এসব পণ্যের বিজ্ঞাপনে নারীদের দেহ খোলামেলা ও যৌন উত্তেজক ভঙ্গিতে প্রদর্শন করা হচ্ছে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্পন্সর বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচারিত এসব কনটেন্ট বয়স যাচাই ছাড়াই কিশোর-কিশোরীদের কাছেও পৌঁছে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এসব ওষুধ বা জেলের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। অধিকাংশই অবৈধভাবে আমদানিকৃত ও অনিবন্ধিত, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। স্টেরয়েড, হরমোন বা ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় তা পণ্যের মোড়কে উল্লেখ করা হয় না।
সচেতন মহল অভিযোগ করছে, সরকারি কোনো কার্যকর নজরদারি না থাকায় অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে অবাধে এসব অশালীন ও ভুয়া স্বাস্থ্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে। তারা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও তথ্য মন্ত্রণালয়কে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দারাজ বাংলাদেশের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস (রুশো) বলেন,
“এগুলো হয়তো রেগুলার চেকআপের গ্যাপে আপলোড হয়েছে। আমাদের প্ল্যাটফর্মে এসব পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ। বাইপাস করে যুক্ত হওয়া পণ্যগুলো শিগগিরই সরিয়ে ফেলা হবে।”
তবে, এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত দারাজের ওয়েবসাইটে ওইসব পণ্য এখনো বিক্রয়যোগ্য অবস্থায় রয়েছে।
সর্বশেষ খবর