• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ ঘন্টা পূর্বে
মোঃ রবিন খান
নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৬ আগস্ট, ২০২৫, ১২:৪৮ দুপুর

অনিয়মের শীর্ষে নাটোরের সিংড়ায় সরকারি হাসপাতাল, ভোগান্তির শেষ নেই রোগীদের

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

নাটোরের সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের অবহেলা, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে রোগীদের ভোগান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে হাসপাতালে ছবি তুলতে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তারা বাধা দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগের রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা চিকিৎসকের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে আছেন। হাসপাতালে জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদ ১১টি থাকলেও কর্মরত আছেন ৫ জন। বর্তমানে নার্স আছেন প্রায় ২০ জন, যদিও কিছুদিন আগে ছিলেন ৩৪ জন।

মেডিকেল সূত্রে জানা যায়, সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসারদের মধ্যে প্রায় ৬ জন সংযুক্তিতে নাটোর সদর, রাজশাহী মেডিকেল ও ঢাকায় কর্মরত। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একটি করে মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসক সংকটে সেগুলো শূন্য।

বহির্বিভাগের এনসিডি কর্নারের কার্ডধারী রোগীরাও ওষুধ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ওঠার সিঁড়ি ময়লা-আবর্জনায় ভরা। রোগীর পাশেই মেঝেতে ময়লার দাগ, দেয়ালের কোথাও কোথাও কফ, থুতু ও পানের পিকের দাগ।

পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের শৌচাগার ব্যবহার অনুপযোগী। রাতে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর হাসপাতালে ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। ফলে বাধ্য হয়ে মোবাইলের টর্চ জ্বেলে চিকিৎসা দিতে হয় নার্স ও চিকিৎসকদের। হাসপাতালের পেছনে ময়লা ও জমাট বাঁধা দুর্গন্ধযুক্ত পানির কারণে মশার উপদ্রবও বেড়েছে। ওয়ার্ডের অধিকাংশ পাখা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে, আলোও জ্বলে না ঠিকমতো। তিনটি কেবিন থাকলেও রোগীদের থাকার উপযোগী নয়।

চাকরি হারানো ও বদলির ভয়ে চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারীসহ হাসপাতালের কেউ এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নার্সরা জানান, হাসপাতালের জেনারেটর চালানো হয় না। বিদ্যুৎ চলে গেলে গরমে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগীদের। অন্ধকারে রোগীদের ওষুধ দেওয়া থেকে শুরু করে জরুরি সেবা ব্যাহত হয়। তখন মোবাইলের আলো জ্বেলে কাজ করতে হয়।

জানা যায়, সিংড়া ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে উপজেলার সাড়ে তিন লাখ মানুষ সেবা নিতে আসেন। হাসপাতালে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয়কৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এক্স-রে ফিল্ম না থাকার অজুহাতে এক্স-রে বিভাগও বন্ধ রয়েছে।

আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন থাকলেও মাঝেমধ্যে ব্যবহার হলেও নিয়মিত সেটিও ব্যবহার হয় না। হাসপাতালের জুনিয়র ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট থাকলেও তাঁরা নিয়মিত বহির্বিভাগে বসেন না। সপ্তাহে দু'দিন হাসপাতালে আসলেও নির্ধারিত সময়ের পর আসেন আবার রোগীর সিরিয়ালে থাকলেও মুমূর্ষু রোগী রেখে দুপুর ২টা বাজলে চলে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হাসপাতালে আসা কাজল বলেন, অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে চার দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। আসার পর থেকেই খাবার ও পানি কম খাচ্ছি যাতে শৌচাগারে না যেতে হয়। শৌচাগারে গিয়ে এখন নিজেই অসুস্থ হওয়ার উপক্রম। এখানে সেবা বলতে কিছু নেই, শিশু ডাক্তার আমাদের সাথে খুব বাজে ব্যবহার করেন।

চলনবিলের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা রোগীর স্বজন ৬৮ বছর বয়সী রাবেয়া বেওয়া বলেন, এই হাসপাতাল নিজেই অসুস্থ, দুর্বল। ওয়ান টাইম টেপ পর্যন্ত বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনে এনেছি। তুলা থাকতেও বের করতে চায় না নার্সরা। নাতিনকে হাসপাতালে আনার পর দু-আড়াই ঘণ্টা বিদ্যুতের কোনো খবর নেই। পরে ছেলেকে বলে বাড়ি থেকে চার্জার পাখা এনেছি, ঠিকমতো ওষুধও দেয় না, চাইলে বলে সরকার ওষুধ দেয়নি। ডাক্তার ও নার্সরা মাঝেমধ্যে খুব বাজে ব্যবহার করেন।

হাসপাতালে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা জানান, হাসপাতালের পরিবেশ এতটাই নোংরা যে এখানে এক মিনিট টিকে থাকা কষ্টকর। নিরুপায় হয়ে রোগী ও স্বজনেরা কোনো রকমে এখানে সময় পার করছেন।

ভর্তি থাকা এক মুক্তিযোদ্ধা রোগী বলেন, হাসপাতালের শৌচাগারে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। পুরুষদের শৌচাগারে একটি সাধারণ আলো থাকলেও প্রতিটি শৌচাগারে আলাদা কোনো আলোর ব্যবস্থা নেই। ফলে মূল দরজা বন্ধ করে প্রয়োজন সারতে হয়, আবার শৌচাগারের দরজার তালাও নষ্ট।

সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম খোকন বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার সংকট রয়েছে, কিছু যন্ত্রপাতির অভাব আছে, যার কারণে যে ক'জন ডাক্তার আছেন, তাঁরা রোগী দেখতে গেলে মাথা ঠিক থাকে না, এ কারণে রোগীদের সাথে কখনো কখনো খারাপ আচরণ করেন বলে অনেক অভিযোগও পেয়েছি। এছাড়া লোকবল সংকট রয়েছে, কিছু সমস্যাও আছে। কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় সব কাজ করা সম্ভব না। কেউই শতভাগ কাজ করতে পারি না, আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]