
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ব্যাঙ্গের দোলা নামক বিলে মাছ চাষের নামে বিলের মাঝে ও দুটি সেতুর সামনে বাঁধ নির্মাণ করায় শতাধিক কৃষকের প্রায় ২৫০ বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিলের পানি নির্ধারিত জায়গা দিয়ে বের না হওয়ায় ওই জমিগুলোতে সদ্য লাগানো আমন ধানের চারা পানিতে তলিয়ে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকের দীর্ঘদিনের প্রতিবাদে কাজ না হওয়ায় এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামের ব্যাঙ্গের দোলা নামক বিলের পানি পার্শ্ববর্তী বিল ও নালা দিয়ে দুধকুমার নদে গিয়ে পড়ে। সেই পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়ে কয়েক বছর ধরে ওই এলাকার শাহজাহান আলীর পুত্র জুয়েল ব্যাঙ্গের দোলা নামক বিলের মাঝখানে বাঁধ তৈরি করে পুকুর কেটে মাছ চাষ শুরু করে। অপরদিকে আমজাদ হোসেনের পুত্র রেজাউল করিম উক্ত বিলের পানি প্রবাহের দুইটি সেতুর নিচে বাঁধ দিয়ে রেখেছে। এর ফলে দীর্ঘদিন থেকে ব্যাঙ্গের দোলার পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় বাঁধের উজানে প্রায় ২৫০ বিঘা জমি তলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই জমির মালিকগণ রোপণকৃত ধান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।
জমির মালিক নজির হোসেন, এনামুল, ফজলুল হক, আলম, হাসেম, আমিনুর ও রফিকুল জানান, জমিগুলো তলিয়ে যাওয়ায় আমাদের রোপণকৃত ধানগুলো সম্পূর্ণ পচে যাওয়ার পথে। আমরা এর দ্রুত একটি সুষ্ঠু সমাধান চাই। ভুক্তভোগী আরেক কৃষক নজির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "বাঁধ দেওয়ায় আমার ৪ বিঘা জমির ধানের চারা পানির নিচে। এক গোছা ধানও এবার মনে হয় টিকাতে পারব না। ধান না হলে পরিবার নিয়ে খাবো কি?"
এ ব্যাপারে মাছ চাষকরা জুয়েলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, "এ বিলের প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ জমি আমাদের তাই বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছি। ইতিপূর্বে পানি নিষ্কাশন ও জমি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসীদের বলেছিলাম তখন তারা গুরুত্ব দেননি। পুকুর পারের নিচ দিয়ে পাইপ বসাতে সম্মত হয়েছিলাম কিন্তু তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি।"
তিলাই ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জানান, "বাঁধ নির্মাণের ঘটনায় আমি সরেজমিনে গিয়েছিলাম। পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে গ্রামপুলিশ দিয়ে সেতু দুটির নীচের বাঁধ একাধিকবার ভেঙে দিয়েছি। পুনরায় দুই জায়গায় বাঁধ দেওয়ার ফলে ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।"
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সারোয়ার তৌহিদ জানান, "অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপ জন মিত্র জানান, "অভিযোগ পেয়েছি, এ ব্যাপারে অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর