
হবিগঞ্জের-নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের জালালসাপ গ্রামে ছালমা আক্তার (৩০) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ ঘরের বাথরুম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে৷
গৃহবধূর পারিবারিক সূত্র ও পুলিশ জানায়, গত সোমবার (১৮আগষ্ট) সোমবার বিকেল অনুমান ৪টায় দেবপাড়া ইউনিয়নের জালালসাপ গ্রামের ডিশ লাইন ব্যবসায়ী হোসেন মিয়ার স্ত্রী ছালমা আক্তারের স্বামীর বাড়ির একটি বাথরুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার নিথর দেহ্ উদ্ধার করা হয়৷ ছালমার স্বামীর বাড়ির লোকজনের দাবি পরিবারের সবার অগোচরে গৃহবধূ ছালমা তিনি আত্মহত্যা করেছেন৷ তবে ছালমার মা ও ভাই বোনদের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, এনিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনার তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার গোপলার বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন৷ ময়না তদন্ত শেষে পরদিন ১৯ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টায় একই উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের কুর্শি গ্রামে গৃহবধূর পিত্রালয়ে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়৷
ছালমার পিতার নাম মৃত সফর আলী, ২ বোন ও ৩ ভাইয়ের মধ্যে ছালমা সবার বড় ছিলেন৷ প্রায় ৭/৮ বছর পূর্বে তাকে একই উপজেলার জালালসাপ গ্রামে বিয়ে দেয়া হয়৷ বিয়ের বছর খানেক পরই ছালমাকে তার স্বামী সৌদি আরবে পাঠিয়ে দেন, এবং প্রবাস জীবনে প্রায় ৪/৫ বছর রুজি রোজগার করে সব টাকা তার স্বামীকে পাঠিয়ে দিতেন, এবং প্রায় ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যবসা ও সংসারের জন্য স্বামীকে দিয়েছেন৷ সম্প্রতি ছালমা দেশে আসার পর কয়েক মাস কুর্শি গ্রামে একটি নতুন বাড়ী বানিয়ে স্বামীকে নিয়ে প্রায়ই সেখানে থাকতেন ছালমা৷
অপরদিকে স্বামী হুসেন মিয়া তার স্ত্রী'র অজান্তে তাকে লুকিয়ে আরেকটি বিয়ে করেছেন, এনিয়ে ইদানীং তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং গত ১ সপ্তাহ পূর্বে ছালমাকে তার স্বামী কুর্শি থেকে জালালসাপ গ্রামে নিয়ে যান বলেও ছালমার পরিবার জানান, সেখানে যাওয়ার পরপরই পরিবারে প্রতিনিয়ত স্বামী/স্ত্রীর মধ্যে ২য় বিয়ে নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি হতো, এরই জেরধরে তাকে হয়ত পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে ছালমার আত্মীয় স্বজন দাবি করছেন৷ এদিকে ঘটনায় আশপাশ ও পাড়া প্রতিবেশীরা জানান, হঠাৎ করে কি কারণে হোসেনের বউ ফাঁস লাগাইলো তা আমরা বুঝে ওঠতে পারছি না।
হয় তো এখানে লুকিয়ে থাকে কোনো অজানা ঘটনা, না হয় দিনদুপুরে একটি জনবহুল বাড়িতে কারণ ছাড়া কেন সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিবে? এ প্রশ্ন অনেকেই রাখেন এবং প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এর রহস্য উদ্ঘাটন করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল ও ছালমার আত্মীয় স্বজন৷ এ ব্যাপারে, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোঃ কামরুজ্জামান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটি আত্মহত্যার মতো ঘটনা।
কিন্তু প্রকৃত এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে হলে লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আশার আগ পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছেনা। আমরা খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে আপনাদেরকে অবশ্যই আমরা জানাবো।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর