
বরগুনার তিনটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে সর্বস্তরের নাগরিকবৃন্দের আয়োজনে এক মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৪ আগস্ট) বেলা ১১টায় বরগুনা পৌরমার্কেট চত্বরে অন্তত সহস্রাধিক মানুষ এতে অংশ নেন।
সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বরগুনায় তিনটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল না হলে জেলার মানুষ উন্নয়নবঞ্চিত হবে। তাঁরা অভিযোগ করেন, বিগত ওয়ান ইলেভেনের সরকার একটি পক্ষকে রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বরগুনার তিনটি আসনকে হীন স্বার্থ চরিতার্থের অপপ্রয়াস হিসেবে দুটি আসন করে। বক্তারা আরও বলেন, বরগুনার ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যা ও আয়তন ইত্যাদি ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী অবশ্যই বরগুনায় তিনটি আসন থাকার কথা, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত একটি চক্র তিনটি আসন থেকে দুটি আসন করে বরগুনার মানুষকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করে।
বক্তারা বর্তমান সরকারের নিকট জোর দাবি করে বলেন, বরগুনার তিনটি আসন পুনর্বহাল না করলে অঞ্চলের মানুষ বড় ধরনের আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। জেলা বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মুরাদ খানের সভাপতিত্বে এই জনসমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজ, বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হায়দার স্বপন, সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন মিরাজ, সিনিয়র সহ-সভাপতি জাফর হোসেন হাওলাদার, প্রিন্ট মিডিয়া সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল ইসলাম টিটু, সাংবাদিক মোশাররফ হোসেন, ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল টিটু, জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শারমিন সুলতানা আসমা, জেলা জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
জানা গেছে, বরগুনা জেলার আয়তন ১ হাজার ৮৩১ দশমিক ৩১ বর্গকিলোমিটার এবং ছয়টি উপজেলা নিয়ে জেলার জনসংখ্যা প্রায় ১২ লাখ ৫০ হাজার। স্বাধীনতার পর থেকে বরগুনা জেলায় তিনটি আসন ছিল—বরগুনা সদর ও বেতাগী উপজেলা নিয়ে বরগুনা-১, পাথরঘাটা ও বামনা নিয়ে বরগুনা-২ এবং আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে বরগুনা-৩ আসন। কিন্তু ২০০৮ সালের ১০ জুলাই তৎকালীন ১/১১ সরকার সমর্থিত নির্বাচন কমিশন ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগকে সুবিধা দিতে পরিকল্পিতভাবে বরগুনা জেলার তিনটি সংসদীয় আসনকে ভেঙে দুটি সংসদীয় আসনে বিন্যস্ত করে। নতুন করে বরগুনা সদর, আমতলী ও তালতলী নিয়ে বরগুনা-১ এবং পাথরঘাটা, বেতাগী ও বামনা নিয়ে বরগুনা-২ আসন গঠন করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এতে জেলার মানুষ উন্নয়নবঞ্চিত হয়।
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন আসন পুনর্বহাল না করে খসড়া গেজেট প্রকাশ করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ১০ আগস্ট বরগুনা জেলার ১৩০ জন তিনটি আসন ফেরানোর দাবিতে আপিল করেন। আগামীকাল (২৫ আগস্ট) ওই আপিলের শুনানির দিন ধার্য করেছে নির্বাচন কমিশন।
বরগুনা জেলা বিএনপির সদস্য ওমর আব্দুল্লাহ শাহীন বলেন, সুষম উন্নয়ন ও প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর সংসদে তুলে ধরতে হলে তিনটি আসন পুনর্বহাল জরুরি। বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হায়দার বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যা ও প্রশাসনিক সুবিধার কথা বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন বরগুনা জেলার তিনটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর