
মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির বলেছেন, "এবার যখন এই বালুমহলের ডাক দেওয়া হয়, তখন ডিসি মহোদয়কে এবং বালুমহলের যারা ব্যবসা করে, তাদের বলেছিলাম— এই বালুমহলে তোমরা কেউ অংশগ্রহণ করো না। আমার মনে হয় এক, দুই এবং তিনবারের মাথায় কেউই অংশগ্রহণ করেননি। আমার কথায় করেনি। এখন মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন এত দুই নম্বরি এবং প্রত্যেক উপজেলা প্রশাসনও এমন দুই নম্বরি যে তারা এক লক্ষ টাকার লোভও সামলাতে পারে না। আমাদের যৌক্তিক আহ্বানকে অন্যায়ভাবে অগ্রাহ্য করে, ডিসির টেবিলে বসে, টেন্ডার ছাড়াই ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। এটা তিনবার টেন্ডারের পর..."।
সোমবার (২৫ আগস্ট) ঘিওর উপজেলার শ্রীধরনগরে অবৈধ ড্রেজার বন্ধ ও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, গতবার এই বালুমহল ইজারা দেওয়ার কারণে শত শত পরিবার ভাঙনের শিকার হয়েছে। সরকারি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সীমানার বাইরে বালু কাটার কারণে পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুষ্ট লোকের চক্রান্তে সরকারি কোষাগারে এটিকে বালুমহল বানিয়ে রাখা হয়েছে।
জিন্নাহ কবির বলেন, "এই বালুমহলের যিনি ডাক নিয়েছেন, তাঁরও বোঝার উচিত ছিল যে তিনবার সরকারি ডাকে কেউ অংশগ্রহণ করেননি, আমি কেন এখানে যাব; নিশ্চয়ই এখানে কোনো সমস্যা আছে। দেখেন ওই ভদ্রলোক কত অবিবেচক। আমি কারও গীবত গাই না— সে ভদ্রলোক খন্দকার বাবলুর সাথে থাকেন, তার নাম টুটুল। এই টুটুলের ডাকের বিরুদ্ধে যখন আমি কথা বলতে গেছি— এখানে ডাক হবে না, তখন বাবলু সাহেব, ডিসি এবং ইউএনও তদবির করে টুটুলের নামে রাতের অন্ধকারে কাজ দিয়েছেন। অফিসিয়ালি টেন্ডার ড্রপ করে এ কাজ হয়নি।"
তিনি বলেন, "ডাক নেওয়ার পর যখন ব্রডকাস্টিং হয়ে গেছে, তখন আপনারা এলাকাবাসী মানববন্ধন করলেন। আমি অনেককেই বলেছি, এই বালুমহলের শেয়ার যারা আমার সাথে রাজনীতি করে, যারা আন্দোলন করেছে, যারা এখনো মিছিল মিটিং করে, যারা ৩২ দফার প্রচারণায় আমার সাথে ঘুরেন, তারা কিন্তু কেউ এইখানে শেয়ার নেবে না। যারা শেয়ার নিয়েছে, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড দেখবেন আপনারা— যে তারা কার সাথে ঘোরেন, কার রাজনীতি করেন। এগুলো দেখতে হবে আপনাদের।"
তিনি আরও বলেন, "যারা ডাক নিয়েছে, তারা তাদের মতো বালু কাটবে। আপনারা আপনাদের মতো নিয়মতান্ত্রিকভাবে মানববন্ধন করেছেন। আমি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেটা দেখেছি মোবাইলের মাধ্যমে। তারপরে যখন সন্ধ্যাবেলা শুনলাম, ওখানে ড্রেজার নাকি কী যেন ভাসিয়ে দিয়েছেন। আমার কথা হলো, ওইটা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলেন না কেন? ওগুলো পুড়িয়ে দিতে হবে।"
জিন্নাহ কবির বলেন, "জনগণের স্রোতের বাইরে কোনো শক্তি নেই। আমার নেতা জনাব তারেক রহমান বলেছেন— জনগণের পাশে থাকবেন, জনগণকে পাশে রাখবেন। আপনারা গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে মানববন্ধন করে আপনাদের দাবি জানিয়েছেন, তারপরেও কীভাবে, কোন সাহসে দুষ্টচক্র এখানে ড্রেজার রেখেছে? আমি যখন শুনলাম, আপনাদের ১১ জনের নামে ওই ড্রেজার ব্যবসায়ীরাই থানায় অভিযোগ দিয়েছে— আপনারা নাকি ড্রেজার ভাঙচুর ও তাদের লোকজনকে মারধর করেছেন। আমার কানে যখন কথাটা এলো, আমি তখন ফোন দিলাম এসপিকে (পুলিশ সুপার)। বললাম, এই ঘটনা নিয়ে যদি কোনো মামলা হয়, তাহলে আমি লোকজন নিয়ে আপনার অফিস ঘেরাও করব।"
তিনি আরও বলেন, "অভিযোগ হয়েছে, পুলিশ এসে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ঘটনা দেখে যাবে। আমার কথায় কোনো মামলা হয়নি। আপনারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করবেন, আমি আপনাদের পাশে আছি। এরপরেও যদি তারা সীমানার বাইরে এসে বালু কাটে, তাহলে তাদের বালুমহলে জমা দেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।"
এ সময় জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক আসিফ ইকবাল রনিসহ স্থানীয় গ্রামবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর