
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার তালতা থেকে আয়রা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক গত ১৫ বছর ধরে উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সমাধান না হওয়ায় অবশেষে গ্রামবাসী তিন দিনব্যাপী এই সড়ক সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে মির্জাপুর ইউনিয়নের তালতা গ্রাম থেকে গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগে কাজ শুরু করে।
সরেজমিনে জানা যায়, রাস্তার কিছু অংশে ইট বিছানো থাকলেও বেশিরভাগই কাঁচা। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও এই রাস্তাটি পাকা করা হয়নি। তালতা উচ্চ বিদ্যালয়, তালতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তালতা হাফিজিয়া মাদ্রাসা এবং এলাকার তিনটি মসজিদসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ইমাম ও সাধারণ মানুষ এই রাস্তা দিয়েই চলাচল করে। দুটি গ্রামসহ আশেপাশের চারটি গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করে থাকে। গত ১৫ বছর ধরে কোনো সংস্কার না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সড়কটি কাদা ও হাঁটু সমান পানিতে ডুবে থাকে, যা চলাচলের জন্য অসহনীয় ভোগান্তির কারণ। বিশেষ করে অসুস্থ নারী-পুরুষ, শিক্ষার্থী, নারী ও বয়স্কদের জন্য চলাচল ছিল চরম দুর্ভোগের।
বিভিন্ন দপ্তরে ধর্না দিয়েও রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে নিজেদের উদ্যোগে কাজ শুরু করেছে। সংস্কার কাজের প্রথম দিনেই রাস্তার দু'পাশের ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে, নিচু জায়গাগুলোতে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে এবং কাদাযুক্ত স্থানে বালি ফেলে সমতল করা হচ্ছে।
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা রাফিস, সিয়ামসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানায়, কাদা-পানির মধ্যে দিয়ে স্কুলে যেতে গিয়ে প্রায়ই পিছলে পড়ে জামা-কাপড় নোংরা হয়ে যায়। অনেক সময় বিব্রত হয়ে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হয় না। এখন সড়কটি সংস্কার হলে তাদের কষ্ট অনেকটাই কমবে। এছাড়া স্থানীয় শিরীন আক্তার নামের এক গৃহবধূ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তাটি এতটাই খারাপ যে কয়েকদিন আগে তিনি চলাফেরার সময় পিছলে পড়ে গিয়ে তার নাকের হাড় ভেঙে গেছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আব্দুল মোত্তালেব বলেন, এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাফেরা করে। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত থাকায় চরম দুর্ভোগ ছিল। তাই গ্রামবাসীর সহযোগিতায় স্বেচ্ছাশ্রমে এই সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। তালতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আজগর বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গিয়েছে। গত ১৫ বছর হলো এই রাস্তাটির কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
এই উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন স্থানীয় যুবক রহমত, সুমন, লতিফ, হাফিজার, নুরু, হামিদ এবং ছাত্রনেতা রবিউল ইসলাম রিফাতসহ প্রায় দুই শতাধিক গ্রামবাসী। উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ বলেন, রাস্তাটি কাজের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি অচিরেই প্রস্তাব পাশ হয়ে আসবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর