বরগুনার আমতলী-কুয়াকাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের মানিকঝুড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তানিয়া আক্তার (২২) নামের এক নববধূ প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসারত অবস্থায় ওই নারী সন্ধ্যায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার সময় মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী থাকলেও তানিয়া যখন সড়কে ছিটকে পড়েন, তখন মোটরসাইকেলে থাকা চালক ও আরোহী দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

নিহত তানিয়া আক্তার আমতলী কালিবাড়ী এলাকার জালাল মৃধার মেয়ে। দুই মাস আগে বরগুনার নাইম হোসেন নামের এক সেনা সদস্যের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল।

নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে ওই নববধূ তানিয়া আক্তার একটি মোটরসাইকেল যোগে চালকসহ তিনজন কুয়াকাটার দিকে যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলের অতিরিক্ত গতি থাকায় পথিমধ্যে আমতলী-কুয়াকাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের মানিকঝুড়ি এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলের পেছন থেকে নববধূ তানিয়া ছিটকে সড়কে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে অজ্ঞান হয়ে যান।

ওই সময় স্থানীয় ট্রাকচালক রুহুল আমিন রকি আহত তানিয়াকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তানিয়াকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত ৮টার দিকে তানিয়া মারা যান।

উদ্ধারকারী ও প্রত্যক্ষদর্শী ট্রাকচালক রুহুল আমিন রকি বলেন, ওই মোটরসাইকেলে এক নারীসহ তিনজন কুয়াকাটার দিকে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে ওই নারী ছিটকে সড়কে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। কিন্তু মোটরসাইকেলটি না থামিয়ে চালকসহ পুরুষ আরোহী দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যান। পরে আমি তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য আমতলী হাসপাতালে নিয়ে আসি।

নিহত তানিয়ার চাচা জাকারিয়া মৃধা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত আমার ভাতিজি বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি আরও বলেন, নিহত তানিয়া কার সঙ্গে নিয়ে কুয়াকাটার দিকে কেন যাচ্ছিলেন, সেটা এখনো জানতে পারিনি।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আহত তানিয়াকে সংকটজনক অবস্থায় আমরা বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠাই। শুনেছি ওখানেই নাকি তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ওই নববধূর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী দুর্ঘটনায় আহত নববধূকে ফেলে কেন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।