
আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল বৃহস্পতিবার ভোরে শক্তিশালী ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে একই এলাকায় এটি তৃতীয় ভূমিকম্প।
গত রোববার প্রথম ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ। এর পর মঙ্গলবার ৫.৫ মাত্রার কম্পন নতুন করে ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনে। আর বৃহস্পতিবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পে আবারও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে দুর্গত এলাকায়।
জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস জানায়, ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল পাকিস্তান সীমান্তঘেঁষা নানগারহার প্রদেশের শিবা জেলায় এবং উৎপত্তিস্থল ছিল ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। নানগারহারের স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র নকিবুল্লাহ রহিমি জানান, বারকাশকট এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। তবে বিস্তারিত তথ্য এখনো সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এর আগে কুনার ও নানগারহার প্রদেশে আঘাত হানা ভূমিকম্পে শত শত গ্রাম ধ্বংস হয়ে যায়। কয়েক লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন এবং অন্তত ৩ হাজার ৬০০ জন আহত হন। উদ্ধারকর্মীরা বৃহস্পতিবারও ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ বের করছেন। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০৫ জনে এবং আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৪০ জন।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয়সহ জরুরি সহায়তা দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এতে দুর্গত এলাকায় মানবিক সংকট আরও তীব্র হতে পারে।
কুনার প্রদেশের বাসিন্দা আলেম জান বলেন, “আমাদের যা কিছু ছিল সব ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন কেবল শরীরে যে কাপড় আছে তাই সম্বল। পরিবার নিয়ে গাছতলায় বসবাস করছি, পাশে স্তূপ করে রাখা আছে সামান্য কিছু অবশিষ্ট জিনিস।”
প্রসঙ্গত, গত রোববারের ৬ মাত্রার ভূমিকম্পটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এরপর মঙ্গলবারের ভূমিকম্প পাহাড় থেকে পাথর গড়িয়ে পড়ে দুর্গম এলাকার সড়কপথ বন্ধ করে দেয় এবং উদ্ধারকাজে বড় বাধা সৃষ্টি করে। সেই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবারের ভয়াবহ কম্পন আবারও জনজীবনে চরম দুর্ভোগ ডেকে আনল।
সর্বশেষ খবর