
মানিকগঞ্জে নারী উদ্যোক্তার খামার স্থাপনকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি ও মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। এ মামলায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করলেও প্রাথমিক তদন্তে চাঁদার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী নারী লতা আক্তার (২৬) মানিকগঞ্জ পৌরসভার আন্ধারমানিক এলাকার বাসিন্দা এবং রাজা মিয়ার (৬০) কন্যা।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, বাড়ির পাশের জমি ভরাট করে বাণিজ্যিক গরুর খামার নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে মানিকগঞ্জ পৌরসভার সার্ভেয়ার ছানোয়ার হোসেন (৪৫) ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাকবিতণ্ডা হয়। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ছানোয়ার দলবল নিয়ে এসে খামারি পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এতে মা নুরজাহান বেগম (৫৫) ও পিতা রাজা মিয়া (৬০) গুরুতর আহত হন। এ সময় খামারের জন্য গরু কেনার নগদ ৩০ লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়।
গত আগস্ট মাসের ২৭ তারিখ এই ঘটনা ঘটে। প্রথমে প্রাথমিক অভিযোগ এবং পরে ৩১ তারিখে পুলিশ মামলা নেয়। মামলা নেওয়ার পর প্রধান আসামি মানিকগঞ্জ পৌরসভার সার্ভেয়ার ছানোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার ৯ দিন পার হলেও এখনো গ্রেপ্তার হয়নি বাকি আসামিরা।
মামলার বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ জানান, মামলা অনুসন্ধানকালে মারধরের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে চাঁদাবাজির ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।
ওসির এ মন্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তাদের দাবি, চাঁদাবাজির কারণেই তারা মারধরের শিকার হয়েছেন। পরে হামলাকারীরা জোরপূর্বক হামলা চালিয়ে নগদ টাকা ছিনতাই করেছে। তাদের মতে, মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করলে পুলিশ সত্যতা খুঁজে পাবে। একজন আসামি ছাড়া বাকিরা এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় সত্য উন্মোচিত হচ্ছে না।
মামলার বাদী লতা আক্তারের স্বামী আবসার খান বলেন, তিনি দীর্ঘ বছর প্রবাসে ছিলেন। সেই প্রবাসের টাকা দিয়ে তিনি এখানে বাণিজ্যিক খামার শুরু করেছেন। খামার সম্প্রসারণের জন্য ৩০ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে তুলে বাড়িতে রাখা হয়েছিল, যা দিয়ে নতুন আরও ১৫-২০টি গরু খামারে আনার কথা ছিল। হামলাকারীরা দীর্ঘদিন ধরেই ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দেওয়ার কথা বলছিল। তিনি এবং তাঁর পরিবার তাতে কর্ণপাত করেননি। একপর্যায়ে তারা চাঁদার জন্য বাড়িতে এসে হামলা করে এবং গচ্ছিত ৩০ লাখ টাকা নিয়ে যায়। তিনি বলেন, এই টাকা পুলিশ উদ্ধার করতে না পারলে তাঁর অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। পুলিশ সকল আসামিদের ধরে অধিকতর জিজ্ঞাসার মাধ্যমে সত্যতা বের করতে পারবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তাঁদের টাকা ফেরত পেতে ও ঘটে যাওয়া ঘটনার উপযুক্ত বিচার চান।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর