
নাগেশ্বরীতে ল্যাট্রিনের সেপটি ট্যাঙ্ক থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ। তবে মামলার মূল আসামি মমিনুল এখনো পলাতক। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মমিনুলের মা মহসেনা বেগম, বোন ফাহিমা খাতুন, প্রতিবেশী নজরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী মনজু বেগম।
জানা যায়, উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সীট মালিয়ানী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু মুরছালিন (৮) স্থানীয় মশিউর রহমানের ছেলে। গত শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে প্রতিবেশী মমিনুলের বাবা ফরিদ উদ্দিনের বাড়ির ল্যাট্রিনের সেপটি ট্যাঙ্ক থেকে মুরছালিনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ, বড় ভাইয়ের বিয়ের আলোচনা চলাকালীন সময়ে প্রতিবেশী মমিনুল ইসলাম মোবাইল দেখানোর প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে বলাৎকার করে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করে। এর আগে (৫ সেপ্টেম্বর) শিশু মুরছালিন নিখোঁজ হলে পরিবারের ও স্থানীয়দের সন্দেহ হয় মমিনুল ও তাঁর পরিবারের উপর। সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশুকে না পেয়ে মুরছালিনের পরিবার খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। পরে একপর্যায়ে মমিনুলের বাড়িতে শিশুর খোঁজ করলে তারা তা অস্বীকার করে এবং বিষয়টি জানাজানি হলে মমিনুলের পরিবার আত্মগোপন করে। বিষয়টি আরও সন্দেহজনক মনে হওয়ায় শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মমিনুলের বাবা ফরিদ উদ্দিনের বাড়ির ল্যাট্রিনের সেফটি ট্যাঙ্কে মুরছালিনের মরদেহ দেখতে পায় স্বজনরা। খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সেফটি ট্যাঙ্ক থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। তবে এর আগেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা মমিনুলের বাড়ি ও নানার বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের তৎপরতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজা জানান, নিহত শিশুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল আসামি মমিনুল ইসলামসহ তাঁর বাবা ফরিদ উদ্দিন, ভায়রা আব্দুল্লাহ ও শ্যালক মাসুম মিয়া পলাতক রয়েছেন। পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।
সর্বশেষ খবর