বরগুনার বামনা উপজেলায় অটোরিকশা চালক হত্যার মাত্র ৫ ঘণ্টার মধ্যে মৃতদেহ উদ্ধার, শনাক্তকরণ এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে বরগুনা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্সে পুলিশ সুপার মোঃ আল মামুন শিকদার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, গত ১১ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে বামনা উপজেলার পূর্ব বলইবুনিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুত্র মোঃ জসিম রানা (৩৫) পশ্চিম বলইবুনিয়া ঈদগাহ ময়দান সংলগ্ন পাকা রাস্তার পাশে ডোবার মধ্যে একটি মৃতদেহ দেখতে পান এবং বামনা থানা পুলিশকে খবর দেন। তাৎক্ষণিকভাবে বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বামনা উপজেলার বড় তালেশ্বর গ্রামের মোঃ ফারুক শিকদারের পুত্র মোঃ আজিজুল (২২)-এর মৃতদেহ শনাক্ত করেন।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করে যে, অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারী যাত্রীবেশে মৃতের অটোরিকশায় উঠে ধারালো চাকু দিয়ে জবাই করে হত্যা করে লাশ ঈদগাহ ময়দানের পার্শ্ববর্তী পাকা রাস্তার পাশে ফেলে রেখে অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে বর্ণিত হত্যাকাণ্ড ও অটোরিকশা ছিনতাইয়ের বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হলে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) সাহেদ আহমেদ চৌধুরী ও বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে মামলা গ্রহণপূর্বক আসামি শনাক্ত করে গ্রেপ্তার এবং ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা উদ্ধারের জন্য যৌথভাবে টিম গঠন করে অভিযান পরিচালনার সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সেমতে বামনা থানা পুলিশ ভুক্তভোগীর লাশ উদ্ধারপূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য থানা হেফাজতে নেয়। পরবর্তীতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল মামুন শিকদারের সার্বিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল), অফিসার ইনচার্জ, ও বামনা থানার চৌকস অফিসার-ফোর্সগণ এলআইসি, পুলিশ অফিস, বরগুনার সহযোগিতায় তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার মাত্র ০৫ ঘণ্টার মধ্যে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া-কাঠালিয়া মহাসড়কের সংযোগস্থল শিকদারের গ্যারেজ নামক এলাকা থেকে ঘটনার দিন রাত ১টার দিকে আসামি মোঃ সাইফুল ইসলাম ও মোঃ হৃদয়কে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশাসহ উদ্ধার ও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। আসামিদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক এবং তাদের দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকুটি বরগুনা জেলার বামনা থানাধীন ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা আন্তঃজেলা ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য বলে জানা যায় এবং তাদের বিরুদ্ধে বরগুনা জেলায় মাদকসহ অন্যান্য একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বর্তমানে আসামিরা থানা হেফাজতে আছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্ণিত ঘটনার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। আসামি মোঃ সাইফুল ইসলাম (পিতা- মোঃ ছগির হাওলাদার, সাং- পশ্চিম বলইবুনিয়া, পোঃ-পশ্চিম বলইবুনিয়া, ৫ নং ওয়ার্ড, থানাঃ-বামনা, বরগুনা)-এর বিরুদ্ধে বামনা থানায় মোট ০৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আসামি মোঃ হৃদয় (২২) (পিতাঃ-মোঃ- ইউনুস আলী হাওলাদার, সাংঃ-পশ্চিম বলাইবুনিয়া, পোঃ-পশ্চিম বলাইবুনিয়া, ৫ নং ওয়ার্ড, থানা-বামনা, বরগুনা)-এর বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে বামনা থানার মামলা নং-০৬, তাং-১২/০৯/২০২৫, ধারা-৩৯২/৩০২/২০১ পেনাল কোড রুজু করা হয়েছে। উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে জড়িত আরও আসামিদের শনাক্তসহ গ্রেপ্তারের জন্য বামনা থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর