
চুয়াডাঙ্গায় ইলিশ মাছের বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও দামে স্বস্তি নেই। গত বছরের তুলনায় ইলিশের দাম এবার দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে। ভারতে ইলিশ রপ্তানির খবরের জেরেই দেশের ইলিশের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শহরের কোর্টমোড়সহ বিভিন্ন বাজারে ইলিশের এই চড়া দামের চিত্র দেখা গেছে। তবে ক্রেতাদের দাবি, ইলিশের বাজারে নিয়মিত মনিটরিং করা হলে দামে স্বস্তি ফিরবে।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে জানা গেছে, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের ইলিশ ভারতে যাবে। আর এর প্রভাব পড়েছে সারাদেশের মতো চুয়াডাঙ্গার বাজারেও। প্রতি কেজি সাইজের ইলিশের দাম দ্বিগুণেরও বেশি ছাড়িয়েছে। এতে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতারা নাজেহাল অবস্থায় পড়েছেন। মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় ৫০০-৬০০ টাকা বেশি। গতবারের তুলনায় ১০০ টাকা বেড়ে ঝাটকা ইলিশের কেজি ৪০০ টাকা। আর গুটকা ইলিশের দাম কেজিতে ৩০০ টাকা বেড়ে ৬০০ টাকা কেজি। কেজি সাইজের ইলিশের দাম ৭০০ টাকা বেড়ে ২১০০ টাকা হয়েছে। এভাবেই ইলিশের বাজার চড়া দামে উত্তাপ ছড়াচ্ছে, যার ফলে সাধারণ ক্রেতাদের এবছর ইলিশ খাওয়া যেন মহাবিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইলিশ ব্যবসায়ীরা জানান, আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ বাজারে বিক্রি হবে। তারপর ইলিশ মাছ বিক্রি বন্ধ হবে। বর্তমানে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও পটুয়াখালী জেলা থেকে চুয়াডাঙ্গার বাজারে ইলিশ আসছে। গত বছরের তুলনায় এবছর ইলিশের দাম বেশি। বাড়তি দাম দিয়ে ইলিশ কিনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের, যার কারণে চুয়াডাঙ্গার বাজারে ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। এখন শুধুমাত্র ছোট সাইজের ইলিশ জালে ধরা পড়ছে; বড় সাইজের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের ইলিশ ভারতে রপ্তানি হওয়ার চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে বাজারে ইলিশ মাছের দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। ইলিশের বাজার বিকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত জমজমাট থাকছে। ধারণা করা হচ্ছে, সামনের দিনে ইলিশ মাছের দাম আরও বাড়তে পারে।
ইলিশ কিনতে আসা এক ক্রেতা আসাদুল ইসলাম বলেন, "এবছর শুরু থেকেই ইলিশের দাম বেশি। সব সাইজের ইলিশের দাম দ্বিগুণ। বছরের একবার ইলিশ কিনে খাই। তারপর আবার যদি এমন দাম বৃদ্ধি হয় ইলিশের, তাহলে কিনে খাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে।"
আরেক ক্রেতা নাজমুল হোসেন বলেন, "মধ্য ও উচ্চমধ্য আয়ের মানুষেরা ইলিশ কেনায় অসহ্য হয়ে পড়ছে। তাহলে নিম্ন আয়ের মানুষেরা কীভাবে ইলিশ কিনে খাবে? এইভাবে ইলিশ বাজার যদি এমন হয়, তাহলে ইলিশ কিনে খাওয়া খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ইলিশের বাজারে মনিটরিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে এইভাবে ইলিশের বাজার অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবে।"
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল ইসলাম বলেন, "ইলিশের দাম পার্শ্ববর্তী জেলার মতোই বিক্রি করতে হবে। এমনটাই ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে। এর বাইরে যদি দাম বাড়তি করে, তাহলে আইন প্রয়োগ করা হবে। তাছাড়া ইলিশ মাছের সরবরাহ ভালো। বাজার মনিটরিং অব্যাহত আছে। সামনের দিন থেকে ইলিশের বাজারে মনিটরিংয়ে জোরদার করা হবে।"
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর