
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সাত বছরের শিশু রোহান মাহমুদ। পৌর প্রি ক্যাডেট স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র রোহান খেলাধুলা, পড়াশোনা আর মসজিদে ছুটে যাওয়ার মধ্য দিয়ে একটি স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই বিরল রোগ 'এপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া' তাকে প্রাণঘাতী সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
রোহান বাগাতিপাড়া পৌরসভার পেড়াবাড়িয়া মহল্লার ভ্যানচালক রবিউল ইসলাম ও গৃহিণী রুনি খাতুন দম্পতির ছোট ছেলে। অভাব-অনটনের সংসার হলেও দুই ছেলেকে নিয়ে তাদের দিন কাটছিল। তবে রোহানের অসুস্থতা পরিবারটিকে একেবারেই কোণঠাসা করে ফেলেছে।
রোহানের মা রুনি খাতুন জানান, কুরবানির ঈদের পর হঠাৎ করে রোহানের শরীরে কালচে দাগ দেখা দেয়। জ্বর ও অসুস্থতা বাড়লে প্রথমে নাটোর, পরে রাজশাহী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রক্তসহ বমি এবং পায়খানার সঙ্গে রক্ত পড়ার কারণে বারবার হাসপাতালে নিতে হয়েছে। অবশেষে ঢাকার শিশু হাসপাতালে চিকিৎসকেরা রোহানকে 'এপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া'য় আক্রান্ত বলে শনাক্ত করেন।
রোহানের বাবা রবিউল ইসলাম, যিনি ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান, হতাশা ভরা কণ্ঠে বলেন, "ডাক্তাররা বলেছেন, বাঁচতে হলে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে, যার জন্য প্রায় ৩০-৪০ লাখ টাকা লাগবে। বিকল্প চিকিৎসায় প্রতি ইনজেকশনের দাম ২-৩ লাখ টাকা। একজন ভ্যানচালকের পক্ষে এই বিপুল অর্থ জোগাড় করা অসম্ভব। আমি সবার কাছে আমার সন্তানের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইছি।"
রোহানের চাচা মুনতাজ আহমেদ জানান, সম্প্রতি রোহানের শরীর খারাপ হলে তাকে রক্ত দিতে হয়েছে। "রাজশাহীতে ভর্তি করার সময় ২ ব্যাগ রক্ত দিতে ২৫ হাজার টাকা লেগেছিল। বারবার রক্ত লাগার এই খরচ আমাদের পক্ষে বহন করা অসম্ভব," তিনি যোগ করেন।
রোহানের স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মর্মাহত হয়ে বলেন, "সে আমাদের প্রথম শ্রেণির ছাত্র। হঠাৎ তার অসুস্থতার খবরে আমরা শোকাহত। যতটুকু পারছি সহায়তা করছি। তবে সমাজের সবাই এগিয়ে এলে হয়তো সে সুস্থ হয়ে আবার পড়াশোনা করতে পারবে।"
রোহানের প্রতিবেশী ও সাবেক কমিশনার কামরুজ্জামান বাবু সহানুভূতির সুরে বলেন, "পরিবারটি একা এত বড় ব্যয় বহন করতে পারবে না। এলাকার বিত্তবানরা এগিয়ে আসুক। সরকারের পক্ষ থেকেও যদি চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে হয়তো এই শিশু নতুন জীবন পেত।"
মাত্র সাত বছরের কোমল প্রাণ রোহান আবার খেলাধুলা, পড়াশোনা আর স্বপ্নের ভবিষ্যৎ ফিরে পেতে চায়। তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে পরিবারটি হতাশায় ডুবে গেছে। তাই দেশবাসীর সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে পরিবার ও এলাকাবাসী।
যোগাযোগ ও সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা:
রোহানের পিতা: রবিউল ইসলাম
বিকাশ: ০১৭৯১-৬৪০২৯৮
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর