
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হঠাৎ অভিযান চালিয়ে খাদ্য সরবরাহ থেকে শুরু করে চিকিৎসাসেবাও নানা অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে। রোববার দুপুরে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক (এডি) মোহাম্মদ আল-আমিনের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন দুদকের ডেপুটি সহকারী পরিচালক (ডিএডি) মোহাম্মদ তহিদুল ইসলাম, ডিএডি চিরঞ্জিব নিয়োগীসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা। এছাড়া অভিযানের সময় হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা আরএমও ডা. হাবিবা সিদ্দীকা ফোয়ারাও উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানের শুরুতেই দুদক কর্মকর্তারা হাসপাতালের রান্না ঘরে গিয়ে রোগীদের খাবারের মান পরীক্ষা করেন। সেখানে দেখা যায় ২০০ গ্রাম ভাত দেওয়ার কথা থাকলেও রোগীদের দেওয়া হচ্ছে কম। সকালের নাস্তার পাউরুটির পরিমাণ ঠিক নেই। ডিমের আকার ছোট। খাবারের লবণ, পেঁয়াজ ও রসুনের মান নিম্নমানের, চিকন চালের পরিবর্তে মোটা চাল দেওয়া হচ্ছে। ডালও নিম্নমানের।
রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, এই ধরনের নিম্নমানের খাবার নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
অভিযানের সময় দুদক কর্মকর্তারা ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখতে পান ১৬০ পিস স্যালাইন মজুদ থাকা সত্ত্বেও রোগীদের বাইরের দোকান থেকে স্যালাইন কিনতে বলা হচ্ছে। বিষয়টি জানতে চাইলে ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নার্স জানান, উপরের থেকে নির্দেশনা আছে। এ বিষয়ে দুদক কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং উক্ত নার্সকে শোকজ করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
অভিযানে প্লাস্টার রুমে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কাজ করা ব্যক্তিদের কেউই হাসপাতালের অনুমোদিত বা কার্ডধারী কর্মী নন। তবু তারা রোগীদের প্লাস্টার করে ১০০, ২০০ কিংবা ৫০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন। দুদক কর্মকর্তারা এই ধরনের অবৈধ অর্থ আদায় বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তারা যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হোসাইন শাফায়াতের কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। তারা তত্ত্বাবধায়ককে অনিয়মগুলো দ্রুত সমাধানের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান।
অভিযানের সময় উপস্থিত রোগী, স্বজন এবং স্থানীয়রা দুদকের এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানান। তারা বলেন, এই হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে খাবার ও চিকিৎসা সেবায় অনিয়ম চলছে।
দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযানে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো যাচাই করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি যেসব অনিয়মের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করবে দুদক।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর