
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীরতে চলতি আমনের ভরা মৌসুমে ইউরিয়া সারের সংকটে চরম ভোগান্তি পরেছে কৃষকেরা। সারের এ চরম সংকটে ক্ষুব্ধ কৃষকের মাঝে দেখা গেছে চরম অসন্তোষ। তাদের অভিযোগ - ঘুরে ঘুরে যেটুকু সার পান তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। উপজেলার কচাকাটা থানার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পাওয়া গেছে এমন তথ্য।
অপরদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ফিরোজ হোসেন সার সংকটের বিষয়টি নাকচ করে বলেন- চলতি আমন মৌসুমে ফসল উৎপাদনে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৪৩৬০ হেক্টর জমির বিপরীতে উপজেলায় ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের জন্য ডিএবি ২৩৪ মেট্রিকটন ও ইউরিয়া ৭০৩ মেট্রিকটন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যাহা ২৪৩৬০ হেক্টর ফসলি জমির প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত। সার সংকটের প্রশ্নই আসেনা। অসাধু ব্যবসায়ীরা রাতের অন্ধকারে সার অন্যত্রে সরিয়ে বা সারের ন্যায্য বন্টন না করে কৃত্রিম সংকট তৈরী করলে এর প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরেজমিনে উপজেলার কচাকাটা থানার কেদার ইউনিয়নের কৃষক নুর মোহম্মদ বলেন- রাতে গাড়ি ভর্তি সার নামছে কিন্তু দিনের বেলা সার কিনতে গেলে সার নেই,আমি দুই দিন সার কিনতে গিয়ে সার না থাকায় ফেরত এসেছি। বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক ও খুচরা সার ব্যবসায়ী সোহেল রানা বলেন- কি আর বলব ভাই, আমি নিজেই ৫ বিঘা ধান লাগিয়েছি, দোকানের জন্য সার পাওয়া তো দুরের কথা- নিজের জমির জন্য সার আনতে গিয়ে ৫ বিঘা ক্ষেতের জন্য সার পেয়েছি মাত্র ১৫ কেজি,এই ১৫ কেজি সার দিয়ে আমি কি করব? তাই মন মন খারাপ করে সার না নিয়েই চলে এসেছি।
কচাকাটা ইউনিয়নের পাইকেরটারী ইউনিয়নের মন্তাজ বলেন,আবাদ করেছি দেড় বিঘা,সারের জন্য তিনদিন ঘুরে সার এখনো পাইনি। বল্লভেরখাস ইউনিয়নের কুমোদপুর কবিরাজ পাড়ার মফিজুল ইসলাম বলেন- ৫ বিঘা আবাদ করেছি, সার সংটের কারনে এখনো জমিতে সার দিতে পারিনি।
কেদার ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আতাউর হতাশা ব্যক্ত করে বলেন- কয়েকদিন ঘুরে সার পেয়েছি মাত্র ১০ কেজি,আবাদ করেছি ৪ বিঘা,১০ কেজি সার দিয়ে কি হবে? সময়মত প্রয়োজন মাফিক জমিতে সার দিতে না পারলে আবাদে চরম ক্ষতি হবে আমার।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার আহমেদ বলেন- উপজেলায় পর্যাপ্ত পরিমানে সার মজুদ রয়েছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চড়া দামে সার বিক্রি করছে এমন অভিযোগ রয়েছে আমাদের কাছে। এর প্রেক্ষিতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে উপজেলা কৃষি দপ্তর। এ অবস্থায় বিশিষ্টজনের অভিমত- সরকার কর্তৃক ভর্তুকির টাকায় কেনা সারের সুবিধা কৃষকেরা ভোগ করতে না পারলে উপজেলা কৃষি বিভাগের ফসলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যহত হতে পারে, যার প্রভাব পড়বে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার ওপরেও।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর