
ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন একটি চারতলা ভবনের ওপর থেকে দেয়াল ধসে স্বপন আলী (১৯) নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে। আহত ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার অবস্থা সংকটাপন্ন।
গত ২১ তারিখ রোববার বিকেলে ঠাকুরগাঁও মুন্সিপাড়া গোরস্থানের পাশে দেয়াল ধসে ওই শিক্ষার্থী আহতের এ ঘটনা ঘটে। গতকাল শনিবার ঠাকুরগাঁও সদর থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন আহত শিক্ষার্থী স্বপনের বড় ভাই রবিউল ইসলাম বাবু।
জানা যায়, দিনাজপুরের একটি বেসরকারি টেকনিক্যাল কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র স্বপন আলী ঠাকুরগাঁও মুন্সিপাড়া গোরস্থানের পাশে রানা মেসের একটি রুমে থাকত। ঘটনার দিন গত ২১ তারিখে স্বপন বাইরে থেকে এসে তার রুমে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিল। এ সময় পাশের নির্মাণাধীন একটি চারতলা ভবনের ওপর থেকে দেয়ালের একাংশ ভেঙে স্বপনের রুমের ওপর পড়ে এবং স্বপন মেরুদণ্ডে ও মাথায় গুরুতর আঘাত পায়। টিনের চালা ভেঙে পড়ার বিকট শব্দে আশেপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় স্বপনকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বর্তমানে সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরো সার্জন ডা. তোফায়েলের অধীনে রয়েছে এবং চিকিৎসকের তথ্য মতে স্বপনের মাথায় ও মেরুদণ্ডে দুটি অপারেশন করতে হবে এবং মেরুদণ্ডের তিনটি হাড়ে রিং পরাতে হবে, যা খুব কম সময়ের মধ্যে করতে হবে।
ঘটনায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থী স্বপন জানায়, “আমি যখন আমার মেসের রুমে শুয়ে ছিলাম তখন একটা বিকট শব্দ কানে আসে এবং ভারি কিছু আমার ওপর পড়ে। এরপর আমার কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরে নিজেকে মেডিকেলের বিছানায় পাই। আমি আমার শরীর নড়াতে পারছি না। আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি আমার রুমে বসে বনসাইয়ের পটসহ হস্তশিল্পের কাজ করতাম। জানি না আমি কবে সুস্থ হয়ে কলেজে যাব আর আমার বানানো জিনিসগুলো দেখতে পাব। শুনেছি ঘটনার দিন সেগুলোও ভেঙে গিয়েছে। আমি ওগুলো বিক্রি করে আমার লেখাপড়ার খরচ চালাতাম।”
এ বিষয়ে নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের মালিক (তহসিলদার) নুর ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, স্বপন সুস্থ হয়ে এলে পারিবারিকভাবে বসে একটি মীমাংসা করা যাবে। তবে ভবন নির্মাণে নিরাপত্তা বেষ্টনী কেন ব্যবহার করেননি এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরোয়ারে আলম খান জানান, “আমাদের কাছে একটি অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর