ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মো: আব্দুল্লাহ্ (২৩) নামে এক যুবককে মিথ্যা চুরির অপবাদ দিয়ে গণপিটুনি ও পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের পর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত আব্দুল্লাহ্ জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালি ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনায় আজ সোমবার নবীনগর থানায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে ও একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের ভাই মো: শাকিল মিয়া। মামলার আসামীরা হলেন, নবীনগর উপজেলার বড়াইল গ্রামের তবি মিয়া, আল আমিন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাহেরচর গ্রামের আয়নাল হক এবং সলিমগঞ্জ অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো: মহিম উদ্দিন। এছাড়া একজন অজ্ঞাত রয়েছেন।

পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর নবীনগরের বড়াইল গ্রামে তবি মিয়ার বাড়িতে একটি চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর সলিমগঞ্জ বাজারে তবি মিয়া, আল আমিন এবং আয়নাল হকসহ ২০/২৫ জন মিলে মো: আব্দুল্লাহকে চোর সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাঁকে সলিমগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো: মহিম উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু ওই ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে আব্দুল্লাহ্কে ক্যাম্পে চার দিন আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। এতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ক্যাম্পের দায়িত্বরত পুলিশ আব্দুল্লাহ্কে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ওই ক্যাম্পের ইনচার্জ আইন অমান্য করে আটক আব্দুল্লাহকে আদালতে না পাঠিয়ে ক্যাম্পে আটকে রেখে নির্যাতন করেন।

আজ সোমবার বিকেলে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে নিহত আব্দুল্লাহর মরদেহের সুরতহাল করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রিন্স সরকার। এ সময় তিনি জানিয়েছেন, নিহত আব্দুল্লাহর কপাল ও হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার মো: এহতেশামুল হক বলেন, এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশি ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সালাউদ্দিন/সাএ