
বাংলাদেশে শিশু নির্যাতনের ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্থা লিডো (Local Education and Economic Development Organization-LEEDO)। আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে লিডোর “Young Journalist Changemaker Group for Creating Positive Outlook Towards Oppressed Children” দ্বারা আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির শিশু-কিশোর সাংবাদিক দল জানায়, শিশু নির্যাতন এখন ভয়াবহ সামাজিক সংকটে রূপ নিয়েছে এবং অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
লিডোর “ইয়াং জার্নালিস্ট চেঞ্জমেকার গ্রুপ” এর উপস্থাপিত তথ্যমতে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৩০৬ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৭৫% বেশি। একই সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন সাম্প্রতিক ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরা হয়— যেমন বরিশালে সৎমায়ের হাতে ১০ বছরের শিশু নির্যাতন, কুমিল্লায় মাদ্রাসাশিক্ষকের যৌন নির্যাতন, গাইবান্ধায় গৃহপরিচারিকা নির্যাতন এবং আশুলিয়ায় “ক্রিম আপা” ঘটনার মতো ঘটনা। সংগঠনটি উল্লেখ করে, ইউনিসেফসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনেও দেখা যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জন্যও শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। পরিবার ও সুরক্ষামূলক পরিবেশেও শিশুরা নিরাপদ নয়। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট তৈরির
“ইয়াং জার্নালিস্ট চেঞ্জমেকার গ্রুপের” সুপারিশসমূহ
সংবাদ সম্মেলনে শিশু অধিকার রক্ষায় লিডো আটটি মূল সুপারিশ তুলে ধরে
১. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পরিবেশ ও মানসিক সহায়তা নিশ্চিতকরণ।
২. পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধে নিয়মিত পরিদর্শন ও অভিযোগ ব্যবস্থার কার্যকারিতা।
৩. শিশুশ্রম বন্ধ ও বিকল্প সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
৪. শিশু নির্যাতনের মামলার দ্রুত তদন্ত ও বিচার।
৫. অভিভাবক-শিক্ষক-নিয়োগকর্তাদের জন্য সচেতনতা ও প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি।
৬. সংবাদ প্রচারে শিশু পরিচয় গোপন রাখা ও ইতিবাচক প্রচারণা জোরদার করা।
৭. সরকার ও এনজিওর সমন্বিত জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন
৮. সাইবার বুলিং ও অনলাইন অপরাধ প্রতিরোধে বিশেষ আইন ও শিশু-বান্ধব হেল্পলাইন চালু।
ইয়াং জার্নালিস্ট চেঞ্জমেকার গ্রুপের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কাছে প্রশ্ন:
লিভোর ইয়াং জার্নালিস্ট চেঞ্জমেকার গ্রুপ রাষ্ট্রের প্রতি কিছু জোরালো প্রশ্ন তোলে—
কেন শিশু এখনো রাস্তায় থাকে?
কেন শিশু গৃহকর্মে নিয়োজিত থাকে?
কেন সমাজ শিশুদের সহজলভ্য সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করে?
কেন আইন অর্থের কাছে নত হয়?
প্রশ্ন-উত্তর শেষে লিডোর নির্বাহী পরিচালক জনাব ফরহাদ হোসেন বলেন, “শিশু নির্যাতন শুধুমাত্র পারিবারিক বা সামাজিক সমস্যা নয়, এটি জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি শিশু আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।”
সংগঠনটি গণমাধ্যমকে আহ্বান জানায়, তারা যেন এই ভয়াবহ পরিস্থিতি আরও ব্যাপকভাবে তুলে ধরে এবং শিশুদের অধিকার রক্ষায় সমাজ ও রাষ্ট্রকে একযোগে পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর