
গাজীপুরের শ্রীপুর রেঞ্জাধীন গোসিংগা বিটের অধীনস্থ কাপাসিয়ার দরদরিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাল-গজারি গাছভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করেছে বন বিভাগ। ঢাকা বনবিভাগের ছয়টি রেঞ্জের অধীনে ২৮টি বিট রয়েছে, যার মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া এলাকা থেকে অবৈধভাবে শাল-গজারি গাছ পাচারের উদ্দেশ্যে একটি ট্রাকে লোড হওয়ার খবর পেয়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে অভিযান চালানো হয়। শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোকলেছুর রহমান নিশ্চিত করেছেন যে, ২৫ ফুট লম্বা ৭০ পিস গজারি গাছভর্তি ট্রাকটি জব্দ করে গোসিংগা বিট অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান জানান, বনদস্যুরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে এবং প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করছে। রাতের আঁধারে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধভাবে গাছ পাচারের মাধ্যমে বন উজাড় করে দিচ্ছে। তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পারমিটবিহীন জোতভূমি থেকে কেটে আনা ৭০ পিস শাল-গজারি ভর্তি (ঢাকা মেট্টো-ট - ১৫-৯৭৩৩) সিরিয়ালের একটি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে এবং গোসিংগা বিট অফিসে নিয়ে আসা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একটি মার্ডার মামলাসহ একাধিক বন মামলার আসামি হারুন সিকদার ৭০ পিস শাল-গজারি গাছ ট্রাকযোগে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা এই গাছভর্তি ট্রাকটি জব্দ করেন। এর আগে, জুলাই আন্দোলনের পর ১ মার্চের দিবাগত রাতে রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশনায় ৫০৭ দাগের সরকারি বনের জায়গা থেকে কেটে আনা ৭০ পিস সরকারি বনের গাছভর্তি [ঢাকা মেট্রো-ট, ১৫-৯৯০৬] সিরিয়ালের একটি কাভারভ্যান গাড়ি জব্দ করে গোসিংগা বিট অফিসে নিয়ে যান গোসিংগা বিট ফরেস্টার হাবিবুর রহমান। তবে সেই সময় অদৃশ্য শক্তির কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সরকারি ও বেসরকারি সবুজ বন অবৈধভাবে কেটে বহুসংখ্যক শাল-গজারি গাছ পাচার করেছেন হারুন সিকদার, যিনি বনদস্যু ফ্যাসিষ্ট দোসর হারুন নামেও পরিচিত।
একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, হারুন সিকদার আওয়ামী ফ্যাসিষ্টের দোসর। তার বিরুদ্ধে একটি মার্ডার মামলাসহ কয়েকটি বন মামলা রয়েছে এবং মার্ডার মামলায় তিনি জেলও খেটেছেন। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, কার নেতৃত্বে এখনো সে গজারি গাছের অবৈধ ব্যবসা করছে এবং তাকে কে লিড দিচ্ছে। তাদের ধারণা, প্রভাবশালী মহলের কেউ কেউ তাকে লিড দিচ্ছে, যে কারণে সে এত সাহসের সঙ্গে সবুজ বন উজাড় করছে এবং শাল-গজারি গাছ পাচার করছে।
হারুনের ভাই রেহান উদ্দিন সিকদার মোবাইল ফোনে এক কথোপকথনে জানিয়েছিলেন, হারুন মদ খেয়ে আবোল তাবোল করে এবং সবসময় মাতাল থাকে। এই কল রেকর্ডটি সংরক্ষিত আছে। অনেকে বলেন, হারুন দৈনিক রুটিন মাফিক মদ্যপান করে। অভিযান পরিচালনায় গোসিংগা বিট ফরেস্টার হাবিবুর রহমান ও অন্যান্য স্টাফরা সহযোগিতা করেছেন বলে রেঞ্জ কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান জানিয়েছেন।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর