• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৪০ দুপুর

তারেকউজ্জামান খানের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান: উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার উত্তরা শহরের কোলাহল, নির্মম যান্ত্রিকতা ও ব্যস্ত নগর জীবনের মাঝেও এক শান্ত, মননশীল আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিষ্ঠান উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরি। উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত এই পাঠাগারটি আজ কেবল বই পড়ার স্থান নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে এক সৃজনশীল আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র — মানসিক বিকাশ ও সামাজিক পরিবর্তনের এক নিরব বিপ্লব।

এর পেছনে আছেন এক স্বপ্নবান মানুষ, সমাজ-সংস্কৃতির নিবেদিতপ্রাণ কর্মী মোহাম্মদ তারেকউজ্জামান খান।

শুরু ও বিকাশের গল্প

২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরি। শুরুতে এটি ছিল এক সাধারণ পাঠাগার, কিন্তু কয়েক বছরের ব্যবধানে তা পরিণত হয়েছে উত্তরার জ্ঞান, সংস্কৃতি ও মানবিকতার বাতিঘরে।

যেখানে অধিকাংশ পাঠাগার কেবল বইয়ের তাক ও টেবিল-চেয়ারে সীমাবদ্ধ, সেখানে উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরি হয়ে উঠেছে একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আত্মোন্নয়নমূলক আন্দোলন।

তারেকউজ্জামান খানের বিশ্বাস—

“একটি বই একজন মানুষকে বদলে দিতে পারে, আর সেই মানুষ বদলে দিতে পারে পুরো সমাজকে।”

এই বিশ্বাস থেকেই তিনি গড়ে তুলেছেন এক ধর্মনিরপেক্ষ, অরাজনৈতিক ও সমাজকল্যাণমূলক পাঠাগার, যেখানে জ্ঞানের আলো পৌঁছে যায় সবার কাছে।

পাঠাগারের বৈশিষ্ট্য

উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরিতে প্রতিদিন গড়ে ৬০–৭০ জন পাঠক আসেন। প্রায় ২০,০০০ বইয়ের সমৃদ্ধ সংগ্রহ, ৫০ জনের বসার জায়গা ও আরামদায়ক পরিবেশ এই লাইব্রেরিকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে।
সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা এই পাঠাগার বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায়ও আইপিএস সুবিধায় চালু থাকে। রয়েছে সিসি ক্যামেরা নিরাপত্তা, ফ্রি ইন্টারনেট, পত্রিকা পাঠ, তথ্য অনুসন্ধান এবং পাঠকদের জন্য পরামর্শ সেবা।

তরুণদের অনুপ্রাণিত করতে নিয়মিত আয়োজন করা হয় সাহিত্য আসর, কুইজ, রচনা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা।
বিশেষ দিনগুলোতে আয়োজন করা হয় মা, বাবা, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, নারী ও শিশুদের সম্মাননা অনুষ্ঠান, পাশাপাশি শীতবস্ত্র, ঈদ সামগ্রী ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কার্যক্রম।

চলমান স্বপ্ন ও পরিকল্পনা

তারেকউজ্জামান খানের দৃষ্টিভঙ্গি কেবল বইয়ের পাঠে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি চান—উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরি হয়ে উঠুক একটি লাইফ-চেঞ্জিং সেন্টার, যেখানে বইয়ের সুবাসের সঙ্গে যুক্ত হবে প্রযুক্তি, দক্ষতা ও উদ্ভাবনের প্রশিক্ষণ।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রয়েছে —

নিজস্ব জমিতে স্থায়ী ভবন নির্মাণ

আধুনিক অডিটোরিয়াম

বুক ক্যাফে ও ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র

কম্পিউটার ল্যাব

স্টেশনারি স্টোর

পাঠকদের জন্য জিমনেশিয়াম

পাঠাগারের দর্শন

এই লাইব্রেরির লক্ষ্য কেবল বই পড়ানো নয়; বরং মনন গঠন, চরিত্র গঠন এবং সমাজে উপযোগী মানুষ তৈরি করা।
যখন তরুণ প্রজন্ম মোবাইল, গেমস ও সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তিতে ডুবে যাচ্ছে, তখন এই পাঠাগার দেখাচ্ছে নতুন দিশা—যে দিশায় বই এখনো মানুষকে ছুঁয়ে যেতে পারে, অনুপ্রাণিত করতে পারে, বদলে দিতে পারে।

সৃজনশীলতা ও সমাজসেবার মেলবন্ধন

‘সৃজনশীল মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে’— এই স্লোগান শুধু কথায় নয়, কাজে পরিণত হয়েছে। প্রতি মাসে আয়োজন করা হয় স্টাডি সার্কেল, সাহিত্যচর্চা, গুণীজন সংবর্ধনা, আলোচনা সভা ও গ্রন্থ পাঠ অনুষ্ঠান। শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে প্রতিযোগিতা, কর্মশালা ও অনুপ্রেরণামূলক সেশন, যা তাদের মানসিক বিকাশে রাখছে ইতিবাচক প্রভাব।

স্বপ্ন থেকে প্রতিষ্ঠানে

তারেকউজ্জামান খানের চোখে উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরি কেবল একটি প্রতিষ্ঠান নয়—এটি একটি স্বপ্ন, একটি আন্দোলন ও এক অবিরাম যাত্রা।
তার একার উদ্যোগে শুরু হওয়া এই পথচলা আজ হাজারো পাঠকের প্রেরণা ও আত্মউন্নয়নের প্ল্যাটফর্মে রূপ নিয়েছে।
যতদিন একটি শিশু, কিশোর বা তরুণ বইয়ের পাতায় ভবিষ্যৎ খুঁজবে—ততদিন উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরি আলো ছড়িয়ে যাবে নিরব, নিঃশব্দ অথচ গভীর প্রভাব নিয়ে।

উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরি প্রমাণ করেছে — স্বপ্ন, ভালোবাসা ও নিষ্ঠা থাকলে একটি ছোট উদ্যোগও সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।
এটি সেই গল্প, যা শুরু হয়েছিল এক মানুষ দিয়ে—মোহাম্মদ তারেকউজ্জামান খান, আর যার আলো ছড়িয়ে পড়ছে শত শত মানুষের জীবনে, অনুপ্রেরণায় এবং জ্ঞানের পথে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]