
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ইসলামী ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত অদক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে বৈষম্য বিরোধী চাকরী প্রত্যাশী ও ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম। সোমবার (৬ অক্টোবর) ইসলামী ব্যাংক ভূরুঙ্গামারী শাখার সামনে আয়োজিত এ মানববন্ধনে বক্তারা ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এস আলমের প্রভাবে ইসলামী ব্যাংকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবি জানান। একইসঙ্গে সারা দেশ থেকে মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নিয়োগের আহ্বান জানান তারা।
সমাবেশে সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি রফতানি কারক ব্যবসায়ী ও ব্যাংকের বিনিয়োগ গ্রাহক আবু হেনা মাসুম, সাধারণ গ্রাহক তাইফুর রহমান মানিক এবং বৈষম্য বিরোধী চাকরী প্রত্যাশী সংগঠনের সম্ননয়ক রাফিউজ্জামান রিফাত বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলের পর ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পদে শুধু চট্টগ্রামের প্রায় ১১ হাজার জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ৫০০০ জনের বেশি পটিয়া উপজেলার। দেশের ৬৩ জেলার প্রার্থীদের বঞ্চিত রেখে এক জেলার প্রার্থীদের প্রাধান্য দেওয়ায় ব্যাংকের সেবার মান ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন।
তারা বলেন, এসব নিয়োগপ্রাপ্তদের অধিকাংশই গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, পেশাদার সেবা দিতে অক্ষম, এমনকি আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলায় গ্রাহকরা যোগাযোগে সমস্যায় পড়েন। এভাবে ব্যাংক চালানো সম্ভব নয় বলে বক্তারা জানান । বক্তারা অবিলম্বে এসব অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে সারা দেশ থেকে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করার দাবি জানান। বক্তারা বলেন, ব্যাংক লুটেরা এস আলম ও তার নিয়োগপ্রাপ্ত অযোগ্য কর্মকর্তাদের অপসারণ না করা হলে গ্রাহকরা একে একে ইসলামী ব্যাংক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, পটিয়া বাহিনী ও এস আলমের অবৈধ দখলদার চক্রের কারণে ব্যাংকের সর্বত্র অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকে এসব নিয়োগপ্রাপ্ত অদক্ষ কর্মকর্তা ব্যাংকের স্থিতিশীল পরিবেশ নষ্ট করছে। এর ফলে ব্যাংকের সম্পদ ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে এবং গ্রাহক হয়রানির আশঙ্কা বাড়ছে। বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ দুবার হ্যাক হওয়ার ঘটনাও এসব দখলদার চক্রের ছত্রছায়ায় ঘটেছে। তারা বলেন, ‘আমরা আর কোনো অরাজকতা দেখতে চাই না, আর কোনো পটিয়া সন্ত্রাসী বা এস আলমের অদক্ষ নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সহ্য করা হবে না। অবিলম্বে তাদের বহিষ্কার করতে হবে।’
ব্যাংক সূত্রে জানাগেছে, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য ইসলামী ব্যাংক গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর মাধ্যমে মূল্যায়ন পরীক্ষা আয়োজন করে। ওই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ৫ হাজার ৩৮৫ জন কর্মকর্তাকে ডাকা হলেও মাত্র ৪১৪ জন অংশ নেন। বাকি ৪ হাজার ৯৭১ জন পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের ওএসডি করে এবং ৪০০ জনকে চাকরিচ্যুত করে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ খবর