জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে। তারা নিজের নিরাপদ প্রস্থানের কথা ভাবছে।”
নাহিদের এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে তার বক্তব্যের ভিডিও ও ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে। এসব পোস্টে সমালোচনা এবং সমর্থনের নানা প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার সন্ধ্যায় একাত্তর টেলিভিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডটি রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ হাজার ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া এবং ১,৪০০ মন্তব্য পেয়েছে।
নাহিদ ইসলাম ২০২৩ সালের জুলাইয়ে গণ-অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক দফা ঘোষণা করেছিলেন। সেই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করতেন। অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে তিনি উপদেষ্টা পদে যোগ দেন এবং পরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারের পদে থাকা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এখনও উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাক্ষাৎকারে নাহিদ বলেন, “উপদেষ্টা হিসেবে কেউ সরকারে যেতে চায়নি। আমরা তখন জাতীয় সরকারের আহ্বান জানিয়েছিলাম। যদি তা হত, ছাত্রদের দায়িত্ব নিতে হতো না। তবে রাজনৈতিক শক্তি বা অভ্যুত্থানের শক্তি সরকারে না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাসও টিকত না। প্রথম ছয় মাস সরকারের পতনের নানা ধরনের চেষ্টা চলছিল, যা এখনও মাঝে মাঝে দেখা যায়।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদের অনেককে বিশ্বাস করা আমাদের ভুল ছিল। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকে শক্তিশালী করে, সরকারে সম্মিলিতভাবে যোগ দেওয়া। নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলের প্রতি যে আস্থা রেখেছিলাম, সেখানে আমরা প্রতারিত হয়েছি। অনেক উপদেষ্টা নিজের স্বার্থ পূরণ করেছে অথবা গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সময় এলে আমরা তাদের নামও প্রকাশ করব।”
নাহিদ ইসলাম যোগ করেছেন, “উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করেছে এবং নিজের নিরাপদ প্রস্থানের কথা ভাবছে। এ কারণেই আমরা অনেক কষ্ট পেতে হচ্ছে। যদি তারা মনে করত যে তাদের নিয়োগকর্তা ছিল গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি, রাজপথে নেমে জীবন দান করা ও আহত সাধারণ মানুষ, এবং যদি তারা তাদের ওপর ভরসা করত, তাহলে এই বিচ্যুতি ঘটত না।”
সর্বশেষ খবর