
জামালপুরের দিগপাইত-সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি 'মহাসড়ক যথাযথ মান প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ নির্মাণ' প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে নানা অনিয়ম, দালালদের দৌরাত্ম্য ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ার ও দালালদের আচরণে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। তারা ভূমি অধিগ্রহণের নামে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ক্ষতিপূরণের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে এলাকাবাসী এই অভিযোগ করেন।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দিগপাইত-সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি 'মহাসড়ক যথাযথ মান প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ নির্মাণ' প্রকল্পে আগাম উৎকোচ না দিলে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের চেক মেলে না। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টাকা না দিলে ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা দিলেও কাগজপত্র ঘাটতির কথা বলে ঘুরানো হয়।
আর কমিশন প্রাপ্ত দালালদের শতকরা হিসেবে নগদ ৫-৭ টাকা হারে টাকা দিলে এক-দুই সপ্তাহ বা সর্বোচ্চ একমাসেই ফাইল পাস হয়। পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি এলাকার মৃত ছবের মণ্ডলের পুত্র মো. হোসেন আলীর (পোগলদিঘা মৌজার খতিয়ান নম্বর ২৩৭৯, দাগ নম্বর ৮৩৪৯) নিজ বসতবাড়ির ০.০৬ শতাংশ জমির মধ্যে ০.০২৩২ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের (এলএ কেস নম্বর ০৫/২০২২-২০২৩) আওতায় পড়ে।
ওই জমিতে শুধুমাত্র বাড়ির দেয়াল থাকলেও তার পাকা ভবন (অধিগ্রহণের বাইরে) কাগজে-কলমে অধিগ্রহণ দেখানো হয়েছে। ভবনকে অধিগ্রহণের আওতায় দেখানোর জন্য বারান্দার একাংশ নিজেরাই ভেঙে ফেলে। জেলা ভূমি অধিগ্রহণ শাখার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ারকে ম্যানেজ করে ভুয়া জরিপের মাধ্যমে ওই ভবনকে অধিগ্রহণ দেখানোর পর ভবন মালিক হোসেন আলী ক্ষতিপূরণের ৩১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৬ টাকার চেক উত্তোলন করেন।
এলাকার সোজাত আলী ও মো. সোলায়মানসহ কয়েকজন জানান, প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। চলতি বছরের ২৮ ও ২৯ জুলাই অধিগ্রহণ শাখার লোকজন ওই ভূমি পুনরায় পরিমাপ করে দেখতে পান, হোসেন আলীর ভবন অবকাঠামো অধিগ্রহণের আওতাধীন নয়। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। আমরা সেই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।
সম্প্রতি বদলি হওয়া জেলা অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. মাহবুব হাসান বলেন, “হোসেন আলীর বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে তিনি উপযুক্ত বিবেচনায় ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হয়েছে।”
এছাড়া নানা অনিয়ম ও দালালদের দৌরাত্ম্য সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা চেষ্টা করি সর্বোচ্চ সেবা দিতে। এরপরও সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।”
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর