• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২ সেকেন্ড পূর্বে
মোঃ এস হোসেন আকাশ
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৯:৩৩ রাত

কোর্টের চালকের বিরুদ্ধে ৩৫ জনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টে চালক হিসেবে কর্মরত সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এলাকার অন্তত ৩৫ জনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। কোর্টে চাকরির প্রভাব খাটিয়ে তিনি এই কাজ করছেন বলে অভিযোগকারীদের দাবি। এসব মামলায় অন্তত দেড় ডজন ব্যক্তিকে হাজতবাস করতে হয়েছে। মামলাগুলোর বেশিরভাগের বাদী সাইফুলের স্ত্রী, বোন ও শ্যালিকা। এমনকি পরিবারের সদস্যরাও তার এই অত্যাচার থেকে বাদ পড়েননি। সাইফুলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা সাক্ষ্য দেওয়া ব্যক্তিরাও বিভিন্ন মামলার আসামি হয়েছেন।

১৯৯৬ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন সাইফুল। ২০০০ সালে তার পারিবারিক একটি বিরোধ মেটাতে গিয়েছিলেন তৎকালীন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন ব্যক্তি। সালিশের সিদ্ধান্ত তার পক্ষে না যাওয়ায় সে সময়ই সালিশকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেই বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ এনে মামলা করেন তিনি। এখান থেকেই তার মামলাবাজি শুরু হয়। এরপর সহোদর ভাই সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৯টি এবং সৎ ভাগ্নে খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা করেছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাসও পেয়েছেন। এছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন সাধারণ মানুষকে মামলার হুমকি দিয়ে নিয়মিত হয়রানির অভিযোগ উঠেছে সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

সদর উপজেলার মুসলিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা খাইরুল ইসলাম, যিনি সাইফুল ইসলামের সৎ বোনের ছেলে, অভিযোগ করেন যে তার জায়গা-জমির সকল বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও সাইফুল ইসলাম তাকে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠিয়ে সেই সম্পত্তি দখল করে নিয়েছেন। তিনি জানান, সাইফুলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধনও করা হয়েছে, কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি এই অসহায় পরিবার।

সাইফুল ইসলামের সৎ বোন সালেহা বেগম, একটি বেসরকারি স্কুলে আয়া পদে চাকরি করেন। তিনি অভিযোগ করেন, একটি মামলা শেষ হতে না হতেই আরেকটি মামলা হয়ে যায়। প্রতিনিয়ত ছেলেকে নিয়ে তাকে আদালতের বারান্দায়, আইনজীবীর চেম্বারে ঘুরতে হচ্ছে। স্বামীহারা সালেহা বেদখল হয়ে যাওয়া সম্পত্তি ফেরত এবং মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই চান।

শুধু তারাই নন, সাইফুল ছোট ভাইয়ের স্ত্রী, সৎ ভাতিজা, তিন ভাগিনা, সৎ বোন জামাই, বিয়াই ও প্রতিবেশীর বিরুদ্ধেও বেশ কিছু মামলা করেছেন। সাইফুলের অন্যায়-অত্যাচার আর হয়রানির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সালিশ ও তদন্তে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন আকলিমা আক্তার নামের এক নারী। সর্বশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর আকলিমা আক্তার ও তার স্বামী শহীদুল ইসলামকে আদালতে দায়ের করা একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে। এই মামলার বাদী সাইফুল ইসলামের ছোট বোন রেহেনা খাতুন।

খাইরুলের মা ছাড়া এই এলাকায় তাদের আর কেউ নেই। এ পর্যন্ত যারাই তার পক্ষে প্রতিবাদ করেছে, তাদেরকেই মামলার আসামি করা হয়েছে। এই ভয়ে কেউই কথা বলতে চান না বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আউয়াল।

দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর সাইফুলের কাছে সম্পদের ভাগ দাবি করেন সহোদর ছোট ভাই সিরাজুল ইসলাম। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে শুরু হয় মিথ্যা মামলা। বিগত ৫ বছরে তিনি ৯টি মামলার আসামি হয়েছেন বলে সিরাজুল ইসলামের অভিযোগ। তিনি বলেন, এসব মামলায় বছরে তিন থেকে চার মাস কারাগারে থাকতে হয়েছে তাকে। মাসে কমপক্ষে পাঁচবার কোর্টে হাজিরা দিতে হয়। ৯টি মামলার মধ্যে ৮টিতে খালাস পেয়েছেন তিনি। তার স্ত্রীকেও মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ করেছেন সিরাজুল ইসলাম।

মুসলিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল লতিফ (৭০) বলেন, বিগত ২৫ বছর ধরে সাইফুল ইসলাম বিভিন্ন লোককে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই হতে হয় মামলার আসামি। তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র জজ কোর্টের চাকরির প্রভাবেই স্থানীয় ব্যক্তিদের হয়রানি করে যাচ্ছেন সাইফুল ইসলাম। এই গ্রামের সবাই তার বিষয়ে অবগত বলেও জানান আব্দুল লতিফ।

জেলা জজ কোর্টের চালক সাইফুল ইসলামের দাবি, তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। তবে তার স্ত্রী বা বোন কখন কার বিরুদ্ধে কয়টা মামলা করেছেন, সে বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। বলেন, তিনি কাজের চাপে খুব একটা বাড়িতে যেতে পারেন না। মাঝে মধ্যে গেলেও কিছুক্ষণ থেকেই শহরে চলে আসেন। এই সময়ের মধ্যে কাউকে কিছু করাও সম্ভব নয়।

কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন বলেন, কেউ যদি মিথ্যা মামলা আনয়ন করে, তবে তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]