• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩২ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০৮ অক্টোবর, ২০২৫, ০৯:৪৫ রাত

বাগরাম ঘাঁটি পুনর্দখলের চেষ্টা: মার্কিন আধিপত্য পতনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিচ্ছবি

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

আফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটি পুনর্দখলের জন্য আমেরিকার প্রচেষ্টা কেবল ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতার প্রতীক নয়, বরং এটি পশ্চিমবিরোধী জোটগুলোর মুখোমুখি হয়ে এই দেশটির আধিপত্যের পতনেরও পূর্ণাঙ্গ প্রতিচ্ছবি। বাগরাম বিমানঘাঁটি- আফগানিস্তানে ভেঙে পড়া সাম্রাজ্যগুলোর এক তিক্ত উত্তরাধিকার যা আবারও চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভূ-রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকির সুরে তালেবান সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা এই কৌশলগত ঘাঁটিটি যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে দেয়। এই দাবি শুধু তালেবানের কঠোর প্রত্যাখ্যানই পায়নি, বরং চীন, রাশিয়া এবং ভারতের মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলোরও তীব্র বিরোধিতা উসকে দিয়েছে।

বাগরাম ঘাঁটি দখলের এই প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত দুর্বলতার একটি স্পষ্ট প্রতীক। এটি এমন দুর্বলতা যা ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে তাড়াহুড়ো করে সৈন্য প্রত্যাহারের মধ্যে নিহিত এবং যা এখন একটি কূটনৈতিক ও সামরিক সংকটে পরিণত হয়েছে। বাগরাম কেবল একটি সামরিক ঘাঁটি নয়, বরং মধ্য এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের চাবিকাঠি এবং এটি হারানো যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের উপর একটি অপূরণীয় আঘাত করেছে। তাই এর নিয়ন্ত্রণ হারানো যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যে এক ভয়াবহ আঘাত।

বাগরামের গুরুত্ব উপেক্ষা করা যায় না। কাবুলের ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এই ঘাঁটিটি, মার্কিন দখলকালীন আফগানিস্তানে (২০০১-২০২১) ড্রোন অপারেশন, গোয়েন্দা নজরদারি এবং সামরিক সরবরাহের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। এখান থেকে ভারী বোমারু বিমান পরিচালনা, বিশেষ বাহিনী মোতায়েন এবং এমনকি চীন ও পাকিস্তানের সীমান্ত পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হতো। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাগরাম ছিল চীনের “নতুন সিল্ক রোড” বা “বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ”–এর ওপর প্রভাব বিস্তারের একটি সুযোগ।

কিন্তু ২০২১ সালে জো বাইডেন প্রশাসনের বিশৃঙ্খল সৈন্য প্রত্যাহার, যেখানে কোনো মিত্রের সঙ্গে সমন্বয় ছাড়াই কয়েক বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম ফেলে যুক্তরাষ্ট্র পালিয়ে যায়, সেই সুবিধাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়। তালেবান শুধু বাগরাম দখলই করেনি, বরং সেটিকে 'পশ্চিমা শক্তির ওপর বিজয়ের প্রতীক' পরিণত করেছে।

আজ চীন বাগরাম সংলগ্ন এলাকায় খনিজ বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রভাব বাড়াচ্ছে; রাশিয়া 'মস্কো ফরম্যাট'–এর মাধ্যমে যেকোনো বিদেশি সামরিক উপস্থিতির বিরোধিতা করছে; আর ভারত, এক আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে, মার্কিন সামরিক অবকাঠামোর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কার্যত এক 'বিরোধী-মার্কিন জোটের অংশে' পরিণত হয়েছে—যা সরাসরি ট্রাম্পের পদক্ষেপের প্রতি ইঙ্গিত করে।

এই ইস্যুটি বৃহত্তর 'বিশ্বশক্তির প্রতিযোগিতা'র প্রেক্ষাপটে আরও তাৎপর্যপূর্ণ। বাগরাম একসময় আফগানিস্তানে চীনা প্রভাব মোকাবিলার ঘাঁটি হতে পারত, কিন্তু এখন আফগানিস্তান হয়ে উঠেছে 'বেইজিংয়ের নতুন প্রভাবক্ষেত্র'। ট্রাম্পের বাগরাম পুনর্দখলের জেদ মূলত দেশের অভ্যন্তরীণ ভোটারদের কাছে 'আমেরিকাকে আবার মহান করা'র প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার প্রচেষ্টা। কিন্তু বাস্তবে এটি এক বিভ্রম, যা 'ওয়াশিংটনের অক্ষমতা ও কৌশলগত বিভ্রান্তি' প্রকাশ করে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন—চীন বাগরামে তাদের অর্থনৈতিক বিনিয়োগ রক্ষায় প্রয়োজন হলে 'প্রক্সি যুদ্ধেও জড়াতে পারে'। রাশিয়া, তালেবানকে সমর্থন দিয়ে, বাগরামকে 'ন্যাটোকে দুর্বল করার একটি হাতিয়ার' হিসেবে ব্যবহার করছে। অন্যদিকে, আঞ্চলিক দেশগুলো যেকোনো নতুন মার্কিন হস্তক্ষেপকে 'আঞ্চলিক শান্তির হুমকি' বলে মনে করছে।

অন্যদিকে, তালেবান স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে: “আমরা কখনোই বাগরাম ছেড়ে দেব না।”

যদি যুক্তরাষ্ট্র এই প্রচেষ্টায় অবিচল থাকে, তাহলে পরিস্থিতি 'একটি নতুন প্রক্সি সংঘর্ষে' রূপ নিতে পারে। অন্যদিকে, যদি ট্রাম্প বাগরাম পুনর্দখলে ব্যর্থ হন, তাহলে তার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আর চীন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মধ্য এশিয়া দখলের পথে এগিয়ে যাবে। যে বাগরাম একসময় চীনকে নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার ছিল, এখন তা 'আমেরিকার পায়ের শৃঙ্খল' পরিণত হয়েছে। এই সংকট যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক প্রভাবের পতনকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। ওয়াশিংটন, আক্রমণাত্মক ও বিভ্রান্ত পররাষ্ট্রনীতির কারণে, বহু কৌশলগত সুযোগ হারিয়েছে এবং এখন 'পশ্চিমাবিরোধী জোটগুলোর সামনে নতজানু' হয়ে পড়েছে। বাগরাম কেবল একটি সামরিক ঘাঁটি নয়—এটি আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির ভুলের প্রতিচ্ছবি। এটি এমন একটি ভুল যার পরিণতি যা আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা থেকে শুরু করে বৈশ্বিক প্রভাবহ্রাস পর্যন্ত- বহু বছর ধরে অনুভূত হবে।

সূত্র: পার্স টুডে ।

সাজু/নিএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com