
ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) বলেছে, তারা গাজায় জরুরি খাদ্য সহায়তা পাঠানোর জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। হামাস ও ইসরায়েলের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে স্বাক্ষরের পর বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ইসরায়েল ও হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে রাজি হয়েছে, এটি এক বিশাল স্বস্তির খবর।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনার পর বুধবার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে উভয়পক্ষ। মিসরে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির আওতায় গাজা উপত্যকা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার ও হামাসের হাতে জিম্মিদের বিনিময়ে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দীকে কারাগার থেকে ছেড়ে দেবে ইসরায়েল।
লাজারিনি বলেছেন, দুই দীর্ঘ বছর ধরে ধ্বংসাত্মক বোমাবর্ষণ, বাস্তুচ্যুতি, ক্ষয়ক্ষতি ও শোকের মাঝে যারা বেঁচে আছেন, গাজার সেই বাসিন্দাদের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে। কঠিন এই সময়ের পর জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দীরা অবশেষে পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবেন।
ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান বলেছেন, গাজায় পাঠানোর জন্য সংস্থাটির হাতে খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত রয়েছে। এর আগে, গাজায় দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে এমন পরিমাণ খাদ্য মজুত আছে, যা দিয়ে পুরো গাজার জনগণকে আগামী তিন মাস পর্যন্ত খাবার সরবরাহ করা সম্ভব।
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ইউএনআরডব্লিউএর তীব্র সমালোচনা করে আসছে ইসরায়েল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পর থেকে এই সমালোচনা আরও তীব্র হয়।
ইসরায়েল সংস্থাটির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে বলেছে, জাতিসংঘের এই সংস্থাটি ‘হামাস সদস্যে পরিপূর্ণ।’ চলতি বছরের শুরুর দিকে ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম নিজ ভূখণ্ডে নিষিদ্ধ করে ইসরায়েল।
ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, তাদের প্রায় ১২ হাজার কর্মী এখনও গাজায় কাজ করছেন। বৃহস্পতিবার লাজারিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে এই কর্মীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। তারা গাজার বাসিন্দাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাসহ মৌলিক বিভিন্ন সেবা নিশ্চিত করবেন।
তিনি বলেন, গাজার ৬ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি শিশু স্কুলে ফেরার জন্য মুখিয়ে আছে এবং ইউএনআরডব্লিউএর শিক্ষকরা তাদের সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছেন। ভবিষ্যতের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গাজার বাসিন্দাদের সহায়তার জন্য ইউএনআরডব্লিউএর পাশে থাকতে সব সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন লাজারিনি।
সূত্র: এএফপি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর