
ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা মাচাদো ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছেন। পুরস্কারের ঘোষণায় বলা হয়েছে, তিনি ভেনেজুয়েলার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় নিরলস কাজ করেছেন এবং একনায়কতন্ত্র থেকে শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়ভিত্তিক পরিবর্তনের জন্য লড়েছেন।
মাচাদো এখন ভেনেজুয়েলাতেই থাকেন। ১৯৬৭ সালে জন্ম নেওয়া এই নারী গণতন্ত্রের লড়াইয়ে দেশের এক পরিচিত মুখ। রাজনৈতিক দমননীতি, হুমকি, এমনকি বহিষ্কার… সব কিছু সয়ে তিনি টিকে আছেন নিজের বিশ্বাসে।
মাচাদো পড়াশোনা করেছেন প্রকৌশল ও অর্থনীতিতে। ব্যবসায়িক জীবনে স্বল্প সময় কাজ করার পর ১৯৯২ সালে তিনি কারাকাসে পথশিশুদের জন্য ‘আতেনেয়া ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। তার লক্ষ্য ছিল সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়ানো।
এর দশ বছর পর তিনি ‘সুমাতে’ নামের এক সংস্থার সহপ্রতিষ্ঠাতা হন। এই সংগঠন মুক্ত ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করে এবং ভোটার প্রশিক্ষণ ও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ চালায়।
২০১০ সালে মাচাদো নির্বাচনে অংশ নিয়ে রেকর্ড ভোটে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০১৪ সালে সরকার তাকে বহিষ্কার করে। তবু থেমে যাননি তিনি। এখন তিনি বিরোধী দল ‘ভেন্তে ভেনেজুয়েলা’-এর নেতা। ২০১৭ সালে তিনি ‘সয় ভেনেজুয়েলা’ নামে নতুন এক জোট গঠন করেন, যা গণতন্ত্রপন্থী সব পক্ষকে একত্র করেছে।
২০২৩ সালে মাচাদো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু সরকার তাকে প্রার্থী হতে বাধা দেয়। পরে তিনি বিরোধী দলের বিকল্প প্রার্থী এদমুন্দো গনজালেস উরুতিয়ার পক্ষে দাঁড়ান। সেই নির্বাচনে বিরোধী দল দাবি করে, তারা জিতেছে, কিন্তু সরকার ফলাফল জাল করে ক্ষমতায় থেকে গেছে।
মাচাদো আজ নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন শুধু নিজের দেশের জন্য নয়, বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে। নোবেল কমিটি বলেছে, গণতন্ত্র মানে হলো নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ভোট দেওয়ার অধিকার এবং নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব পাওয়া… এই অধিকারই শান্তির ভিত্তি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর