
আফগান রাজধানী কাবুলে শুক্রবার বিকেলে একাধিক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে শহরটি। একই সঙ্গে পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। তালিবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিকমাধ্যমে বলেন, ঘটনাটি তদন্তাধীন, জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে পরবর্তীতে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করে, এই বিস্ফোরণের পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে।
তালিবান সরকারের অভিযোগ, পাকিস্তান সীমান্ত অতিক্রম করে কাবুল ও পাকতিকা এলাকায় হামলা চালিয়েছে। তবে ইসলামাবাদ এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, আফগানিস্তানে বিশেষ করে তালিবান শাসনাধীন এলাকায় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠীর সদস্যরা নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে থাকে। অন্যদিকে তালিবান বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয় না।
এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে এমন সময়ে, যখন তালিবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুহতাকি ভারতের ছয় দিনের সরকারি সফরে রয়েছেন। এটি তালিবান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ভারতের সঙ্গে তাদের প্রথম উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে। আফগান সরকারের এই সফরকে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন কূটনৈতিক সমীকরণের সূচনা হিসেবেও দেখা হচ্ছে। তালিবান সরকারের লক্ষ্য এখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিস্ফোরণের এই ঘটনাটি কেবল আফগানিস্তান নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। যদি পাকিস্তান সত্যিই আফগান ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে থাকে, তবে তা তালিবান সরকারের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হবে। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে তালিবান সরকারের সম্পর্ক উষ্ণ হলে, তা পাকিস্তানের জন্য নতুন কূটনৈতিক মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সম্পর্ক এমনিতেই টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে। সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ, টিটিপি হামলা এবং পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাসের কারণে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্রমেই জটিল হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে কাবুলে বিস্ফোরণ শুধু দুই দেশের সম্পর্ক নয়, গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর