• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৬ সেকেন্ড পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:০২ রাত

৯/১১-এর ধুলা ও বিষাক্ততা; ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে বাবাও হারালেন জীবন

ছবি: সংগৃহীত

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ক্ষত আজও শুকায়নি। সেই হামলার ২৪ বছর পর এবার প্রাণ হারালেন নিউইয়র্ক সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্টের (এফডিএনওয়াই) সাবেক ডেপুটি চিফ জেমস ‘জিম’ রিচেস। গ্রাউন্ড জিরোতে দীর্ঘদিন অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে বিষাক্ত ধুলা ও ধোঁয়ার সংস্পর্শে এসে সৃষ্ট জটিল রোগেই শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু হয়েছে।

এফডিএনওয়াই সূত্র জানায়, গত থ্যাঙ্কসগিভিং ডেতে (২৮ নভেম্বর) জেমস রিচেস মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭৪ বছর। তিনি ৯/১১–সংক্রান্ত রোগে মারা যাওয়া চার শতাধিক এফডিএনওয়াই সদস্যের একজন।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দ্বিতীয় টাওয়ার ধসে পড়ার সময়ই গ্রাউন্ড জিরোর দিকে ছুটে যান ব্যাটালিয়ন চিফ জেমস রিচেস। তার বড় ছেলে জিমি রিচেস জুনিয়র সেদিন ডিউটিতে ছিলেন। ব্রুকলিনের ল্যাডার ১১৪–এর ফায়ারফাইটার জিমি জুনিয়র শেষবার দেখা গিয়েছিলেন নর্থ টাওয়ারের লবিতে এক আহত নারীকে বের করে আনতে।

ছেলের ৩০তম জন্মদিন পালনের বদলে রিচেস পরবর্তী ছয় মাস ধ্বংসস্তূপের ভেতর স্টিল ও ছাই ঘেঁটে খুঁজে বেড়ান সন্তানের কোনো চিহ্ন। অবশেষে ২০০২ সালের মার্চে নর্থ টাওয়ারের ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার হয় জিমি জুনিয়রের হেলমেট ও মরদেহ। ৯/১১ হামলায় দায়িত্ব পালনকালে নিহত ৩৪৩ জন ফায়ারফাইটারের একজন ছিলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্যমতে, টাওয়ার ধসের পর নিম্ন ম্যানহাটন ও আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে বিষাক্ত ধুলা, গ্যাস ও ধোঁয়ার ঘন মেঘ। সেই পরিবেশেই মাসের পর মাস কাজ করেছেন রিচেস।

ছেলের মরদেহ উদ্ধারের পরও তিনি গ্রাউন্ড জিরোতে কাজ চালিয়ে যান। অন্য পরিবারগুলোর জন্য অন্তত কিছুটা শান্তি ফিরিয়ে দিতে আরও নিখোঁজদের খোঁজে প্রতিদিন হাজির হতেন তিনি। উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয় ২০০২ সালের মে মাসে।

পরবর্তী বছরগুলোতে রিচেস নিজেও ভয়াবহ শারীরিক জটিলতায় ভুগতে থাকেন। ২০০৫ সালে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ১৬ দিন কোমায় ছিলেন। প্রাণে বাঁচলেও তার ফুসফুসের সক্ষমতা আর স্বাভাবিক হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসজনিত রোগে ভুগেই শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু হয়।

ফায়ার ডিপার্টমেন্ট থেকে ২০০৭ সালে ডেপুটি চিফ হিসেবে অবসর নেন রিচেস। তবে অবসরেও থেমে থাকেননি। তিনি ৯/১১–এ ক্ষতিগ্রস্ত ফায়ারফাইটার, উদ্ধারকর্মী ও পরিবারগুলোর জন্য ন্যায়বিচার ও চিকিৎসা সুবিধার দাবিতে দুই দশকের বেশি সময় ধরে লড়াই করেছেন। তার নেতৃত্ব ও আন্দোলনের ফলেই গড়ে ওঠে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার হেলথ প্রোগ্রাম এবং ৯/১১ ভিকটিম কম্পেনসেশন ফান্ড।

৯/১১ পরিবার ও ফায়ারফাইটারদের সংগঠনের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কংগ্রেসে সাক্ষ্য দেন, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং হামলার জন্য অভিযুক্তদের বিচারপ্রক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতিনিধিত্ব করেন।

ডিসেম্বরের ১ তারিখ ব্রুকলিনের সেন্ট প্যাট্রিক রোমান ক্যাথলিক চার্চে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শত শত মানুষ, সহকর্মী ও উচ্চপদস্থ ফায়ার কর্মকর্তারা তাকে শেষ বিদায় জানান। ব্যাগপাইপের করুণ সুরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হয় এক নিরলস যোদ্ধার শেষ যাত্রা।

ছেলেকে হারিয়ে যে মানুষটি গ্রাউন্ড জিরো ছাড়েননি, শেষ পর্যন্ত সেই গ্রাউন্ড জিরোর বিষাক্ত স্মৃতিই তার প্রাণ কেড়ে নিল—তবে রেখে গেল সাহস, ত্যাগ আর ন্যায়বিচারের এক অমলিন ইতিহাস।

সাজু/নিএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]