
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন কৌশলে মাঠ সাজাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোরভাবে গুরুত্ব দেয়া, সভা-সমাবেশে সংযমী বক্তব্য, তৃণমূল পর্যায়ে মাঠ গোছানো, নারী ভোটারদের টানতে সংগঠনের নারী কর্মীদের কাজে লাগানো সহ সার্বিকভাবে মাঠ সাজাচ্ছে দলটি। দলের হাই কমান্ড বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর পদক্ষেপ সহ নির্বাচনের বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে দলের নীতি নির্ধারণী ফোরাম।
নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান প্রতিপক্ষ জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে কিভাবে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা যায় তার সঠিক এবং গোপন কৌশলে এগিয়ে চলছে দলটি। দলের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়- দলের হাই কমান্ড তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনায় দলের শৃঙ্খলা বজায় রেখে নির্বাচনের সঠিক কৌশল অবলম্বন করে এগিয়ে যাচ্ছে দলটি। মিটিং মিছিলে কিভাবে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো যায়, তৃণমূলের নেতা কর্মীর সাথে সুসম্পর্ক উন্নয়ন করা, এছাড়াও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে অন্তর দ্বন্দ্ব সহ সকল প্রকার সমস্যার সমাধান করে সঠিক কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছে বিএনপি।
নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী চূড়ান্ত করণ বিষয়েও মাঠ পর্যায়ে থেকে সঠিক রিপোর্টের ভিত্তিতে তারেক জিয়ার নির্দেশনায় প্রার্থী নির্বাচন করণ বিষয়টিও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, মনোনয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবেন দক্ষ সংগঠক, আন্দোলনে ভূমিকা, সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যরা। প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে এবারের মনোনয়ন তালিকায় চমক থাকবে বলে আভাস দিচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। তারেক রহমান কথা বলেছেন জেলা-উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সাথে। বিভিন্ন পর্যায়ে জরিপও করা হয়েছে। রাজনীতির নতুন প্রেক্ষাপটে এই প্রক্রিয়ায় এখন পর্যন্ত ২শ’ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, প্রতিটি আসনে একক প্রার্থী নির্ধারণের আগে দলীয় পর্যায়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। তিনি বলেন, “প্রতিটি আসনে গড়ে চারজন করে প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। কোথাও কোথাও প্রতিদ্বন্দ্বী দলের চেয়ে নিজেদের মধ্যেই বিরোধে জড়াচ্ছেন অনেকে।”
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তবে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে— ধানের শীষের প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিলে বা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ালে বহিষ্কারসহ কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, বিএনপি ইতোমধ্যে প্রায় সাত হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে সবাই অপরাধ বা দখল-চাঁদাবাজির অভিযোগে জড়িত নন; অনেকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণেও অভিযুক্ত হয়েছেন।
মনোনয়ন প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি এমন প্রার্থীকে বেছে নিতে চায় যিনি নিজের এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত, এলাকার সমস্যা সম্পর্কে সচেতন ও সক্রিয় এবং তরুণ, নারী, ছাত্রসহ সমাজের সব শ্রেণির মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও আস্থা বজায় রাখতে পারেন। তার ভাষায়, “জনগণের যার প্রতি সমর্থন আছে, যিনি সেই সমর্থন ধরে রাখতে পারেন — এমন ব্যক্তিকেই আমরা অগ্রাধিকার দেব।”
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর