
চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে কনসার্টে জয় বাংলা, শেখ হাসিনা স্লোগান দেয়া নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, অনুমতি না নিয়ে কনসার্টের আয়োজন করা হয়। পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয় কনসার্টে।
রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে খুলশী থানায় এসআই (নিরস্ত্র) রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে আটক দেখানো হয়েছে।
আটককৃতদের ৫ জন আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এবং ৫ জন আয়োজক কমিটির সদস্য। আটককৃতরা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা নুর এলাহী ফারুক (৫০), ছাত্রলীগ কর্মী আয়মান মুরাদ ফারদিন (১৮), শহিদুল ইসলাম সানি (২৪), সাব্বির হোসেন (২৭) ও তাসলিমুল ইসলাম ইফাজ (১৮)। এছাড়া আয়োজক কমিটির বাকি ৫ সদস্য হলেন- নাজমুল হোসাইন, সালমান আহমেদ অভিন, আলেক খন্দকার, জাকির হোসেন, ও নূরে আলম সিদ্দিকী।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) শ্রীমা চাকমা বলেন, “হোন্ডা আয়োজিত এই কনসার্টের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। কিছু যুবক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য কনসার্টে এসেছিল। পুলিশ এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে এবং ১০জনকে আটক করেছে। ”
নাম প্রকাশের শর্তে একটি বিশেষ সূত্রে জানা যায়, পিএইচপির সুফি মিজানের মালিকানাধীন জিইসি কনভেনশন সেন্টারে হোন্ডা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে ‘ফান অ্যান্ড রক ফেস্ট’ কনসার্টে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী ও কিশোর গ্যাং সদস্যরা 'শেখ হাসিনা' স্লোগান দিয়ে ভিডিও ভাইরাল করে। ওমরগণি এমইএস কলেজের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ২৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি পক্ষ কনভেনশন সেন্টারের মূল ফটক ভাঙচুর করার চেষ্টা করছে। এ সময় ভেতরে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছোড়েন। খবর পেয়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা হলের সামনে জড়ো হন।জিইসি মোড়ের কনভেনশন সেন্টারে মোটরসাইকেল উৎপাদক একটি প্রতিষ্ঠান কনসার্টের আয়োজন করে। এতে ব্যান্ড দল আর্টসেল গান পরিবেশন করতে আসে। কনসার্ট সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। সন্ধ্যায় কনসার্ট শুরু হলে শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনা বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন কিছু লোক। অনেকে তা মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন। পরে হট্টগোল শুরু হয় এবং কনসার্ট পণ্ড হয়ে যায়। কনভেনশন সেন্টারে ভাঙচুর শুরু হয়। এখন সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, কনসার্ট চলাকালে একটি পক্ষ সেখানে জয় বাংলা স্লোগান দেয়। স্লোগান দেয়া ব্যক্তিরা ছাত্রলীগের কর্মী। এ নিয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ করেন। এরপর দুপক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে ছাত্রদল কর্মী নাজির শরীফ (২৩) গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া ছাত্রদল নেতা রাজু আহমেদ ও মোহাম্মদ হোসেন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক আরিফুল হক মিঠু জানান, কনসার্টে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া হলে সাধারণ জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদ গড়ে তোলার চেষ্টা করে। এরপর পরই ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর