
ফরিদপুরের সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর (৪৮) এবং তার স্ত্রী রুমা আক্তার (৪০) বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুর্নীতি দমন কমিশন, ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক রতন কুমার দাশ বাদী হয়ে ফরিদপুরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে এ মামলা দুটি দায়ের করেন।
দুটি মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় এ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর সালথা উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি সালথার গট্টি ইউনিয়নের কাকিয়ার গট্টি গ্রামের বাসিন্দা মো. আবুল হোসেন ও নুরজাহান বেগমের ছেলে।
এজাহারে ওয়াদুদ মাতুব্বরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে বলা হয়েছে, সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বররের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে দুদকে তাকে তার সম্পদের বিস্তারিত বিবরণী জমা দিতে বলা হয়। তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণিতে ৫৮ লক্ষ ৮৭ হাজার ৬৪৭ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন করে ভিত্তিহীন তথ্য দেওয়া হয়। এছাড়া দাখিলকৃত ওই সম্পদ বিবরণীতে ২০ লাখ টাকা ঋণেরও তথ্য দেওয়া হয় যা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এজাহারে আরও বলা হয়, অসৎ উদ্দেশ্যে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ৫৫ লক্ষ ২৯ হাজার ৪৬৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রাখার অভিযোগ রয়েছে ওয়াদুদের বিরুদ্ধে। এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২০০২ সালের ৩০ মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত যে কোন সময়ে এ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ওয়াদুদ মাতুব্বর স্ত্রী রুমা আক্তার গট্টি ইউনিয়নের সিংহপ্রতাপ গ্রামের বাসিন্দা মো. ইমামুল হোসেন আনোয়ারা বেগমে দম্পতির মেয়ে।
স্বামী ওয়াদুদের পাশাপাশি স্ত্রী রুমা আক্তারের বিরুদ্ধে একই সময় দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। তখন তিনিও দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন।দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে রুমা ৭৪ লক্ষ ৪১ হাজার ৮৯৮ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন করেন। অসৎ উদ্দেশ্যে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে আরও এক কোটি ১১ লক্ষ ৮২ হাজার ১৩৭ টাকা মূল্যের অপরাধলব্ধ সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রাখার অভিযোগও আনা হয় ওই মামলায়। এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত যে কোন সময়ে এ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দুদকের সহকারি পরিদর্শক মো. শামীম জানান, ওয়াদুদ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় ফরিদপুরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে দুদকের পক্ষ থেকে এ মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছে। এ মামলা দুটি তদন্ত করবেন দুদক ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক সর্দার আবুল বাসার। তদন্ত শেষে তিনি এ ব্যাপারে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেবেন।
বিভিন্ন মামলায় গত ৫ মাস ধরে সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর কারাগারে থাকায় এ মামলা দুটির বিষয় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ওয়াদুদের স্ত্রী রুমা আক্তারের ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্যও জানা সম্ভব হয়নি।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর