
যশোর শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় ফল এ বছর পাসের হার ৫০.২০ পেয়ে বিপর্যয় হয়েছে। পাসের হার সারাদেশের মধ্যে প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। যা স্মরণকালের মধ্যে সর্বনিম্ন। ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ভেন্যু কেন্দ্র প্রত্যাহার করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা গ্রহণের কারণে এমনটি হয়েছে। যদিও বোর্ড কর্তৃপক্ষ এটিকে বিপর্যয় বলতে নারাজ। এবারের এইচএসসিতে যশোর শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে পাঁচ হাজার ৯৯৫ জন। বৃহস্পতিবার সকালে যশোর শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ফলাফল ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ আসমা বেগম।
এ বছর যশোর বোর্ডের আওতায় ১০ জেলা থেকে মোট এক লাখ ১২ হাজার ৫৭৪ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ৫৬ হাজার ৫০৯ জন। এদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২১ হাজার ১৮০ জন পরীক্ষা দিয়ে ১৫ হাজার ৯৩১, মানবিক বিভাগে ৭৮ হাজার ৯৯৯ জন পরীক্ষা দিয়ে ৩৪ হাজার তিন ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ১২ হাজার ৩৯৫ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ছয় হাজার ৫৭৫ জন। ৫ হাজার ৯৯৫ জন পেয়েছে জিপিএ-৫। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে তিন হাজার ৩৮১, মানবিক বিভাগে দু’হাজার ১৭৯ ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ৪৩৫ জন রয়েছে।
যারা কৃতকার্য হয়েছে তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৯৯৫ জন জিপিএ-৫, জিপিএ-৪ থেকে ৫ এর নীচে ১৯ হাজার ৩০, জিপিএ-৩.৫ থেকে ৪ এর নীচে ১৪ হাজার ৩৬, জিপিএ-৩ থেকে ৩.৫ এর নীচে ১১ হাজার ১৫৪, জিপিএ-২ থেকে ৩ এর নীচে ছয় হাজার ১৫৮ এবং জিপিএ-১ থেকে ২ এর নীচে ১৩৬ জন রয়েছে।
জেলা পর্যায়ে পাসের হারে এবার শীর্ষে রয়েছে যশোর। যশোর জেলায় পাস করেছে ৫৮.২৫ শতাংশ। এছাড়া, খুলনায় ৫৩.৯৮, বাগেরহাটে ৪১.৮৫, সাতক্ষীরায় ৫২.৬৪, কুষ্টিয়ায় ৪৮.৮৫, চুয়াডাঙ্গায় ৫০.৩৫, মেহেরপুরে ৪৮.৫১, নড়াইলে ৪৬.৪৬, ঝিনাইদহে ৪৫.০৭ ও মাগুরায় সর্বনিম্ন ৩৭.৪৬ শতাংশ পাস করেছে।
বোর্ডের পরীক্ষা বিভাগ থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিগত চার বছরের মধ্যে পাসের হার সবচেয়ে কম হয়েছে এ বছর। ২০২২ সালে পাসের হার ছিল ৮৩.৯৫, ২০২৩ সালে ৬৯.৮৮, ২০২৪ সালে ৬৪.২৯ এবং ২০২৫ সালে ৫০.২০। কেবল চার বছর না, স্মরণকালের মধ্যে পাসের হার এত কম হয়নি।
পাসের হার কমে যাওয়া প্রসঙ্গে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.মোসাম্মাৎ আসমা বেগম বলেন,‘চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে এসব শিক্ষার্থী দীর্ঘ সময় রাজপথে ছিল। আন্দোলন সংগ্রামের কারণে তাদের পড়াশোনা ও প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল। এছাড়া নকলমুক্ত, সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ করতে ভেন্যু বাতিল করা হয়। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা কোনো অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করতে পারেনি। এ বছর ৪৫.১৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এসব কারণে সার্বিক ফলাফলে প্রভাব পড়েছে বলে দাবি চেয়ারম্যানের।
ফলাফল প্রকাশের সময় সচিব প্রফেসর এসএম মাহবুবুল ইসলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. আব্দুল মতিন, বিদ্যালয় পরিদর্শক কামরুজ্জামান, কলেজ পরিদর্শক তৌহিদুল ইসলাম, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়ামত এলাহী, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষা কেন্দ্র বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করা হয়।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর