• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩৭ সেকেন্ড পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ১৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৩৭ দুপুর

এইচএসসিতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দুই বোনের ‘এ’ গ্রেড পেয়ে পাস

ছবি: সংগৃহীত

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মোসা. ফিরোজা খাতুন ও তার ছোট বোন মোসা. সোনিয়া খাতুন। তারা দুই বোন খুলনার পিএইচটি সেন্টারের নিবাসী। এবারের এইচএসসিতে চমক দেখিয়েছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এই দুই বোন। খুলনার দৌলতপুর মুহসীন মহিলা কলেজ থেকে পরীক্ষায়  অংশ নেন তারা। তাদের স্বপ্ন শিক্ষক হয়ে প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান করাবেন। 

বৃস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) এইচএসসির ফল পেয়ে উচ্ছ্বসিত দুই বোন। 

এবার এইচএসসির ফল বিপর্যয়ের মধ্যেও তাদের সফলতায় খুশি পিএইচটি সেন্টার কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক ও সহপাঠীরা। বাধা থাকলেও নিজেদের মেধায় এগিয়ে রয়েছেন তারা। এবারের এইচএসসির ফলাফলে দুইজনই পেয়েছেন ‘এ’ গ্রেড। দুজনই জানালেন তাদের স্বপ্নের কথা।

বড় বোন ফিরোজা খাতুন বলেন, খুলনার পিএইচটি সেন্টারে প্রথম শ্রেণিতে আমি ও আমার ছোট বোন ভর্তি হয়েছিলাম। ১৩ বছর ধরে এখানেই রয়েছি আমরা। একসঙ্গে লেখাপড়া করেছি। দৌলতপুর মুহসীন মহিলা কলেজ থেকে দুইজনই এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলাম। ফলাফল পেয়েছি। আমি এবার ৪.০০ পয়েন্ট পেয়ে পাস করেছি। আর ছোট বোন সোনিয়া ৪.৬৭ পয়েন্ট পেয়েছে। আমরা দুইজনই ‘এ’ গ্রেড পেয়েছি। 

নিজের স্বপ্নের কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি শিক্ষক হতে চাই। শিক্ষক হয়ে প্রতিবন্ধী ছোট ভাই—বোনদের লেখাপড়া শেখাবো।

ছোট বোন সোনিয়া খাতুন বলেন, এবার এইচএসসিতে পাসের হার কমেছে। আরও ভালো করা সম্ভব হতো যদি সব ধরনের সুবিধা থাকতো। বিশেষ করে বেইল পদ্ধতির বইগুলো থাকলে। আইসিটি, বাংলা ও ইংরেজি বেইল পদ্ধতির বই ছিল। বাকিগুলো শুনে শুনে মুখস্থ করতে হতো। পরীক্ষায় আমি বলেছি এবং একজন শ্রুতি লেখক সেটা লিখেছে। ফল বিপর্যয়ের মধ্যেও আমরা দুই বোন ভালো রেজাল্ট করেছি। এতেই আমরা খুশি। 

তিনি বলেন, ২০১৩ সালে পিএইচটি সেন্টারে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আমরা দুই বোন একইসঙ্গে লেখাপড়া করতাম। সেখানকার শিক্ষকরা আমাদের খুব বেশি সহযোগিতা করেছেন। আমাদের গ্রামের বাড়ি কয়রা উপজেলায় হলেও ২০১৬ সালে বাবা-মা দুজনই কাজের জন্য ভারতে গিয়েছেন। এখনো তারা সেখানেই রয়েছেন। নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। রেজাল্ট পেয়েই তাদের জানিয়েছি। তারা খুবই খুশি। এখন স্বপ্ন পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো। প্রতিবন্ধী শিশুদের লেখাপড়া শিখানো। এ জন্য শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে।

শুধু ফিরোজা আর সোনিয়াই নয়, এইচএসসিতে অংশ নেওয়া পিএইচটি সেন্টারের অংশ নেওয়া শতভাগ দৃষ্টি ও বাক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী পাস করেছে। তাদের দুইজনের সঙ্গে এবারের এইচএসসিতে পাস করেছে বাক প্রতিবন্ধী শাম্মী আক্তারও। তিনি কথা বলতে ও শুনতে না পারলেও শিক্ষকদের সঙ্গে ইশারায় কথা বলেন। একইসঙ্গে লিখে নিজের কথা জানাতে পারেন। কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় ইশারায় প্রশ্ন করা হয় শাম্মীকে। তিনি লিখে ও ইশারায় তার উত্তর দেন।

শাম্মী জানান, বাবা ফরিদপুরের ছালাম শেখ এবং মা জাহানারা বেগম। এবারের পরীক্ষায় পাস করে তিনি খুব খুশি। খুলনার গোয়ালখালী পিএইচটি সেন্টারের ৫ জন নিবাসী এবারের এইচএসসিতে অংশ নিয়ে পাস করেছেন।

এছাড়া পিএইচটি সেন্টারের নিবাসী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ময়না খাতুন রুনা জিপিএ ৩.৭৫ ও বাকশ্রবণ প্রতিবন্ধী মিতু ৩.০৪ পেয়ে পাস করেছেন।

খুলনার গোয়ালখালী পিএইচটি সেন্টারের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক নার্গিস আক্তার বলেন, আমাদের এখানকার নিবাসী ফিরোজা ও সোনিয়া দুই বোন খুবই ভালো ফলাফল করেছে। এবারের এইচএসসিতে অংশ নেওয়া ৫ জনই একসঙ্গে পাস করেছে। এতে আনন্দিত, রেজাল্ট পেয়ে আমরা খুশি।

খুলনার গোয়ালখালী পিএইচটি সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক ও সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি বাক শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, এটাকে পিএইচটি সেন্টার বলা হয়। এ বছর এখানকার ৫ জন মেয়ে শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরমধ্যে ৩ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও ২ জন বাক শ্রবণ প্রতিবন্ধী। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ৩ জনের মধ্যে ২ জন ‘এ’, একজন ‘এ মাইনাস’ এবং বাক শ্রবণ প্রতিবন্ধী দুই জনের একজন ‘বি’ ও একজন ‘সি’ গ্রেড পেয়ে পাস করেছেন। তবে তারা যে পদ্ধতিতে এখানে কাজ করে বাহিরে সেই পদ্ধতির সুবিধা পায় না। যে কারণে লেখাপড়ায় সমস্যাই পড়তে হয়। কিন্তু তবুও এবার শতভাগ পাস করেছে। এতে আমরা আনন্দিত।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]