
কক্সবাজারের টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নূরের বিরুদ্ধে আলোচিত ইয়াবা ডন জুবাইরের স্ত্রীকে ঘুষের বিনিময়ে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে- ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে ওসি আবু জায়েদ ফাইজাকে (জুবাইরের স্ত্রী) আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন।
এ ঘটনার পর থেকে টেকনাফ ও কক্সবাজার আদালতপাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আইনজীবী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার আদালতে তাকে আনা হয় একটি সাদা রঙের এসি নোহা গাড়িতে। ওই সময় এএসআই দিলদারের নেতৃত্বে থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য ফাইজার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
এবিষয়ে জানতে ওসি আবু জায়েদ মো. নূরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি আরেকটি গণমাধ্যমে বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কোনো ধরনের টাকা লেনদেন হয়নি।’ তবে কেন একজন মাদক মামলার আসামিকে বিশেষ এসি গাড়িতে আদালতে নেওয়া হলো- সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে টেকনাফের আলোচিত ইয়াবা কারবারি জুবাইরের বাড়িতে টানা আট ঘণ্টার বিশেষ অভিযান চালায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। অভিযানে ১৯ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা, ১৩০ গ্রাম ইয়াবা পাউডার এবং নগদ ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ সময় জুবাইরের স্ত্রী ফাইজা ও সহযোগী আয়ুব আলিকে গ্রেপ্তার করে বিজিবি। পরে তাদের টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার পর থেকেই ফাইজাকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠতে থাকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফাইজার পরিবারের পক্ষ থেকে ওসিকে ঘুষ দিয়ে কক্সবাজার আদালতে যাওয়ার সময় আরামদায়ক গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। এতে করে থানার অভ্যন্তরেই ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
স্থানীয়দের দাবি, টেকনাফ থানায় দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে আছেন ওসি আবু জায়েদ মো. নূর।
টেকনাফ সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরেই ইয়াবা কারবারিদের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত। প্রায় প্রতিটি অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার হলেও অনেক সময়ই দেখা যায়, একই এলাকায় আবারও সক্রিয় হয়ে উঠছে একই সিন্ডিকেট। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশ আর দায়মুক্তিই এ মাদক ব্যবসাকে আরও বেপরোয়া করে তুলছে।
টেকনাফের স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যেখানে মাদক কারবারিদের স্ত্রীও থানায় বিশেষ সুবিধা পায়, সেখানে সাধারণ মানুষ বিচার পাবে কীভাবে?
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর