
পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল কক্সবাজার জেলার অর্থনীতিতে বিদেশি পর্যটকের উপস্থিতি আশানুরূপ নয়। জরিপ বলছে, এর অন্যতম কারণ নিরাপত্তার ঘাটতি।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকায় আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় ‘কক্সবাজার কমিউনিটি অ্যালায়েন্স, ঢাকা (সিসিএডি)’ পরিচালিত জরিপে জানানো হয়, ৮৮.১% অংশগ্রহণকারী মনে করেন কক্সবাজারে পর্যটক নিরাপত্তা দুর্বল।
‘কক্সবাজারের উন্নয়ন যাত্রার জোয়ারভাটা: সমস্যা, সম্ভাবনা ও বৈশ্বিক প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এ আলোচনায় উঠে আসে, ৮৬.৬% অংশগ্রহণকারী জেলার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় পর্যটন ও সৈকত ব্যবস্থাপনাকে।
জরিপে অংশ নেওয়া অধিকাংশই স্থানীয় বা কক্সবাজারে কর্মরত। তাদের মধ্যে ৫৩.৭% আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন জরুরি মনে করেন। ৮৪.৩% বলছেন, রোহিঙ্গা সংকট ও নিরাপত্তা সবচেয়ে জরুরি সমাধানের বিষয়।
রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় অপরাধ বেড়েছে বলে মনে করেন ৫৭.৫%। অপরদিকে, প্রশাসনের তৎপরতা বেড়েছে বলে মনে করেন ১০.৪%।
পরিবেশগত দিক বিবেচনায় অংশগ্রহণকারীদের ৫৯.৭% বলেন, বালিয়াড়ি ও পাহাড় দখলমুক্ত করা জরুরি। যানজট নিয়ন্ত্রণ চায় ৪৯.৩%, জলাশয় রক্ষা ৪৩.৩% এবং পর্যটন কাঠামোর নিয়ন্ত্রণ চান ৪১.৮%।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৭.২% মনে করেন, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মসংস্থান বেড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বেড়েছে বলছেন ৫২.২%। তবে ৮৪.৩% মনে করেন, প্রকল্পটির কারণে পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। জীববৈচিত্র্য হ্রাস, মৎস্য উৎপাদন কমা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়েও উদ্বেগ আছে।
সিসিএডির প্রধান সমন্বয়ক মোহিব্বুল মোক্তাদির তানিমের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, কক্সবাজার হবে দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। বঙ্গোপসাগরের খনিজ আহরণে প্রযুক্তি গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
বিএনপি নেতা শহীদুজ্জামান বলেন, কেবল পর্যটনে মনোযোগ না দিয়ে সমুদ্র সম্পদ ও ভূরাজনীতিক গুরুত্বের দিকেও নজর দেওয়া উচিত।
বুয়েটের অধ্যাপক ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলো সমুদ্র থেকে খনিজ আহরণ করছে, অথচ বাংলাদেশ এ বিষয়ে পিছিয়ে।
গোলটেবিলে আরও বক্তব্য দেন—কোস্ট ফাউন্ডেশনের রেজাউল করিম চৌধুরী, অধ্যাপক আশফাক হোসেন, সাবেক সচিব মাফরুহা সুলতানা, সংগঠক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর