
ইসরায়েলি হামলার ধ্বংসযজ্ঞের পর গাজা উপত্যকায় আবর্জনার স্তূপে ঘেরা হয়ে পড়েছে বাসযোগ্য এলাকাগুলো। দীর্ঘ অবরোধ ও জ্বালানি ঘাটতির কারণে বর্জ্য অপসারণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন সেখানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগব্যাধি।
জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার শরণার্থী ক্যাম্প ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে এখন লাখো টন আবর্জনা জমে আছে। এগুলোর বেশিরভাগই পচে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং মশা, মাছি ও ইঁদুরসহ বিভিন্ন রোগবাহী প্রাণীর বংশবৃদ্ধি ঘটাচ্ছে।
বর্জ্য জমে থাকা স্থানে শিশুদের মধ্যে ত্বকের ঘা, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দ্রুত বেড়ে চলেছে বলে জানায় কয়েকটি স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ায় এসব রোগের চিকিৎসাও পাচ্ছে না অধিকাংশ মানুষ।
অবরোধের কারণে গাজায় ইন্ধন প্রবেশ সীমিত থাকায় বর্জ্য পরিবহন যান চলতে পারছে না। ফলে শহর ও ক্যাম্পের রাস্তা এখন রীতিমতো ‘আবর্জনার নদী’তে পরিণত হয়েছে। গরম ও আর্দ্রতার কারণে এগুলো থেকে নির্গত গ্যাস ও দুর্গন্ধ শ্বাসযন্ত্রের রোগের ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধ ও অবরোধের ফলে পানির উৎস, নর্দমা ও আবর্জনা একত্রে মিশে গিয়ে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নারী ও শিশুরা, যারা আশ্রয়কেন্দ্র বা ভাঙা ঘরের পাশে বসবাস করছে।
আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেকে নিজের পুরনো বাড়ির ধ্বংসস্তূপে ফিরে গেলেও চারপাশের স্তুপকৃত আবর্জনা ও দূষণে বসবাসের অনুপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অনেকেই বাধ্য হয়ে সেই ময়লার পাশেই তাঁবু গেড়ে রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা দ্রুত আন্তর্জাতিক সহায়তায় বর্জ্য অপসারণ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় গাজায় এক ভয়াবহ মহামারি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স, আল–জাজিরা, দ্য ন্যাশনাল নিউজ, এপি নিউজ।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর