অস্ট্রেলিয়ার শহরগুলোর মধ্যে আ্যাডিলেড সবসময়ই ছিল ভিরাট কোহলির সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। শহরটির সঙ্গে তাঁর যেন ছিল এক ব্যক্তিগত সম্পর্ক— হিন্দলি স্ট্রিটের প্রিয় ক্যাফে, টরেন্স নদীর সেতু পেরিয়ে আ্যাডিলেড ওভালে পৌঁছানো, কিংবা সেই পিচে ব্যাট হাতে খেলার আনন্দ— সবই যেন তাঁর দ্বিতীয় ঘর হয়ে উঠেছিল।
তাই বৃহস্পতিবার দুপুরে যখন কোহলি চার বল খেলে জেভিয়ার বার্টলেটের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ০ রানে ফেরেন, তখন সেটা শুধু এক ইনিংসের সমাপ্তি নয়, বরং এক “ভালোবাসার গল্পের” অবসানও বটে। প্রায় দেড় দশক ধরে আ্যাডিলেডে অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্তের পর এবার সেই সম্পর্ক শেষ হলো এক নিঃশব্দ বিদায়ে।
এক সময় এই মাঠেই ব্যাট উঁচিয়ে চারদিকের দর্শকদের অভিবাদন জানাতেন কোহলি। এবার তিনি ধীরে ধীরে মাঠ ছাড়লেন মাথা নিচু করে, গ্লাভস তুলে কেবল বিদায় জানালেন গ্যালারিকে— যেন সময়ের কাছে পরাজিত এক কিংবদন্তি।
এই ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে ভারতও হার মানল দুই ম্যাচ শেষে তিন ম্যাচের সিরিজে। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া ওডিআই দলে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করল। তরুণ তিন ব্যাটার— ম্যাট শর্ট, কুপার কনলি ও মিচ ওউন— দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে জয় এনে দেন। এই তিনজনই এখন দেখা দিচ্ছেন আগামী এক দশকের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ওডিআই দলের মূল স্তম্ভ হিসেবে।
তাদের খেলার স্বাধীনতা, আত্মবিশ্বাস এবং নির্বাচকদের অবিচল আস্থা প্রমাণ করছে যে অস্ট্রেলিয়া তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় অনেক এগিয়ে। বিপরীতে, ভারতীয় নির্বাচকেরা এখনও দুই তারকা— কোহলি ও রোহিত শর্মা—কে ভরসা করছেন পুরোনো গৌরব ফেরানোর আশায়। প্রশ্ন উঠছে, ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত কি এই দড়ি যথেষ্ট লম্বা থাকবে?
রোহিত শর্মা কিছুটা লড়াই করেছেন— জশ হ্যাজলউডের দুর্ধর্ষ বোলিংয়ের সামনে ধীরে শুরু করলেও শেষে কিছু ছক্কা-চার মেরেছেন। ৬২ বলে ৩০ রান থেকে তাল খুঁজে পেয়ে ৬২ বলে ৫৬ করেন তিনি। কিন্তু মিচেল স্টার্কের গতির সামনে শেষ পর্যন্ত তিনিও থেমে যান।
এই ম্যাচে স্পষ্ট হয়েছে, ভারত এখনো পুরনো নায়কদের ওপর নির্ভরশীল, আর অস্ট্রেলিয়া গড়ে তুলছে নতুনদের ঘিরে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।
সূত্র: Cricbuzz .
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর