টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনে শতভাগ সফলতা অর্জনের জন্য সাংবাদিকদের সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কর্মশালার প্রধান অতিথি ড. মোহাম্মদ আলতাফ-উল-আলম।
রবিবার (২৬ অক্টোবর/২৫) সকালে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট আয়োজিত “Divisional Level Consultation Workshop on TCV Vaccination Campaign 2025 with Media People” শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. আলতাফ-উল-আলম বলেন,“টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচিকে শতভাগ সফল করতে হলে প্রচার-প্রচারণা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বেতার, বিটিভি, পিআইডি ও গণযোগাযোগ অধিদপ্তরসহ সরকারি গণমাধ্যমের পাশাপাশি বেসরকারি মিডিয়াগুলোও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আপনাদের নিরলস প্রচেষ্টার কারণেই জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।”তিনি আরও বলেন “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় টিকাদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে, আর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সেই কার্যক্রমের প্রচার ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। শুরুতে কিছু গুজব ছড়ালেও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় আমরা তা কাটিয়ে উঠেছি। এখন দরকার আরও জোরদার প্রচারণা চালিয়ে অভিভাবকদের সচেতন করে প্রতিটি শিশুকে টিকার আওতায় আনা।
” কর্মশালায় ডা. নুসরাত আজরীন মহসীন টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ নিয়ে একটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। এতে জানানো হয়, দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে টিকাদানে ময়মনসিংহ বিভাগে সর্বোচ্চ অর্জন হয়েছে—গড়ে ৯৫.০৩%।বিভাগীয়ভাবে অর্জনের বিবরণ: ময়মনসিংহ জেলা : ৯৫.৮৬% জামালপুর জেলা : ৯৪.২৯% নেত্রকোনা জেলা : ৯২.৬৯%,শেরপুর জেলা : ৯৯.১%,ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন : ৯১%,সরকারি হিসাবে, দেশে মোট ৪ কোটি ৩৭ লক্ষ ৯৪ হাজার ৭৯০ শিশুকে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় ১ কোটি ৯৩ লক্ষ শিশুকে টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য নির্ধারিত এই টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে অষ্টম স্থানে রয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, প্রতি বছর টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রায় ৬ হাজার শিশু মৃত্যুবরণ করে,কর্মশালায় উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ময়মনসিংহ বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার তাহমিনা আক্তার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন ময়মনসিংহ জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ। ভার্চুয়ালি কর্মশালার উদ্বোধন করেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহম্মদ হিরুজ্জামান এনডিসি।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন—তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ও উপ-প্রকল্প পরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন ময়মনসিংহ বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ড. প্রদীপ কুমার সাহা পিআইডি ময়মনসিংহ আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান ইউনিসেফ ময়মনসিংহের প্রধান মোঃ ওমর ফারুক,জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মোঃ মারুফ নাওয়াজ,সিভিল সার্জন ডা. ফয়সল আহমেদ,ইউনিসেফের এসবিসি স্পেশালিস্ট এ. আর. এম. এম. কামাল,হেলথ অফিসার আলমগীর হোসেন,এবং ময়মনসিংহ বিভাগের জাতীয় ও আঞ্চলিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ। কর্মশালায় বক্তারা বলেন,টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে হলে শুধু সরকারি উদ্যোগই নয়, গণমাধ্যমের সচেতন প্রচারণাও অপরিহার্য।সাংবাদিকদের ইতিবাচক ভূমিকা ও জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ টিকাদানে আরও বড় অর্জনের পথে অগ্রসর হচ্ছে।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর