ঠাকুরগাঁওয়ে মেডিকেল কলেজ, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড), পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বন্ধ বিমানবন্দর পুনরায় চালুর দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা নাগরিক উন্নয়ন ফোরামের আয়োজনে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় ঠাকুরগাঁও চৌরাস্তায় ঘন্টাব্যপি এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, পেশাজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
নাগরিক উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি সত্য প্রসাদ ঘোষ নন্দনের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য দেন,সংগঠনটির সিনিয়র:সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, সহ-সভাপতি হাসান মাহমুদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক শরিফুল করিম রুবেল, জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল মোমিন রতন, জেলা মটর শ্রমিক নেতা আব্দুল জব্বার, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা বিপু পাল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সর্ব উত্তরে জেলা ঠাকুরগাঁও পঞ্চগড় ও দিনাজপুরের একাংশ সহ প্রায় অর্ধকোটি মানুষের যোগাযোগের সহজ কেন্দ্রবিন্দু ঠাকুরগাঁও সদর। আমাদের এই অঞ্চলের গণ-মানুষের উন্নত চিকিৎসা স্বার্থে যেতে হয় ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে। কিন্তু ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং আইসিইউ ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের ঠাকুরগাঁও জেলা খাদ্য উৎপাদনে একটি উদ্বৃত্ত জেলা। আমাদের এই জেলায় গড়ে ওঠেনি কৃষিভিত্তিক ভারী শিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল অথবা ইপিজেড। আর শিল্প কারখানা না থাকায় আমাদের এই অঞ্চলে কর্মসংস্থানের সুযোগ খুবই কম। যার ফলে আমাদের এই অঞ্চলে বেকারত্বের হার প্রতিদিন বেড়েই চলছে এবং আমাদের যুবসমাজ বেকারত্ব বোঝা নিয়ে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। ঠাকুরগাঁও থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটারের বেশি। আমাদের এই অঞ্চলের মানুষের কাছে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকা ১১ থেকে ১২ ঘন্টার সড়ক বা রেল পথে যাতায়াত সহজ মনে হলেও, কর্মের তাগিদে দক্ষিণ অঞ্চল থেকে আসা মানুষের কাছে এই দীর্ঘপথ মোটেও স্বস্থির নয়। ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকা ভারতীয় সীমানা দ্বারা বেষ্টিত। নেপাল আমাদের সীমানা ঘেষা না হলেও, নেপাল বাংলাদেশের খুব কাছাকাছি। নেপাল একটি পর্যটন নির্ভর দেশ। নেপালের কৃষি জমি খুবই কম। তাই নেপালের খাদ্য চাহিদা মেটাতে আমদানির উপর নির্ভর করতে হয়। ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার সীমান্ত থেকে নেপালের সীমান্ত মাত্র ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে।
ত্রিদেশীয় অবস্থানের কারণে আমরা খুব সহজে নেপালে যেতে পারি না। তাই ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক হাব হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর থেকে নেপালের একাধিক বিমানবন্দর খুব কাছাকাছি। ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর থেকে নেপালের ভদ্রপুর বিমানবন্দর মাত্র ৬৯ কিলোমিটার। এছাড়াও ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর থেকে নেপালের বিরাটনগর বিমানবন্দর মাত্র ১২০ কিলোমিটার। এই দুটি বিমানবন্দরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হলে আমরা পর্যটন শিল্পে এগিয়ে যেতে পারি। পাশাপাশি আমাদের উৎপাদিত পণ্য নেপালের বাজারেও প্রবেশ করাতে পারি। এছাড়াও উত্তরের এ জেলা গুলি থেকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার এবং বিশ^বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার জন্য রংপুর ,রাজশাহী কিংবা ঢাকা যেতে হয়।
তাই আগামীর দেশ গড়তে ও আর্থসামাজিকসহ জীবন মানের উন্নয়নে অবিলম্বে ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর পুনরায় চালু ও মেডিকেল কলেজ স্থাপন সহ কৃষি ইপিজেড ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জোর দাবি জানান তারা।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর