ক্যারিবীয় দ্বীপ জ্যামাইকার দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে আঘাত হেনেছে ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মেলিসা’। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় প্রায় ১৮৫ মাইল (প্রায় ২৯৫ কিলোমিটার) বেগে ভূমিতে আঘাত হানে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি জ্যামাইকার ইতিহাসে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর একটি।
ঝড়ের আঘাতে প্রবল বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ো বাতাসে দ্বীপটির বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাজধানী কিংস্টনসহ দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বিশেষ করে সেন্ট এলিজাবেথ প্যারিশকে “পুরোপুরি পানির নিচে” বলে বর্ণনা করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
জ্যামাইকার বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, অন্তত ৫ লাখ ৪০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছেন—যা দেশটির মোট গ্রাহকের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি। ব্ল্যাক রিভার হাসপাতালের ছাদ উড়ে গেছে, আরও কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু ও অন্তত ১৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে অনেক এলাকা এখনো বিচ্ছিন্ন থাকায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্রপৃষ্ঠের অস্বাভাবিক উষ্ণতার কারণে দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে ক্যাটাগরি–৫ মাত্রায় উন্নীত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভবিষ্যতে এ ধরনের তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন জলবায়ুবিদরা।
বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় মেলিসা জ্যামাইকা অতিক্রম করে উত্তর-পূর্ব দিকে কিউবা ও বাহামার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। দেশজুড়ে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হলেও, ভাঙা রাস্তা ও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্নতার কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষি, পর্যটন ও উপকূলীয় অবকাঠামোতে বড় ধরনের ক্ষতি দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।
সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট, এপি নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান ও রয়টার্স।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর