লন্ডনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, গত বছর ছাত্রদের নেতৃত্বে হওয়া বিক্ষোভে নিহতদের জন্য তিনি কোনো ধরনের ক্ষমা চাইবেন না। একই সঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, তার দল আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে যদি বাংলাদেশে কোনো সরকার গঠিত হয়, তাহলে তিনি দেশে ফিরবেন না; বরং ভারতে অবস্থান করবেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশত্যাগের পর এটাই শেখ হাসিনার প্রথম বিদেশি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার। তিনি ওই সময় ভারতের দিল্লিতে আশ্রয় নেন। বর্তমানে বাংলাদেশে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে, যারা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা ‘অন্যায় ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’। তার ভাষায়, “কোটি কোটি মানুষ আওয়ামী লীগের সমর্থক। তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা চালানো সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, “পরবর্তী সরকারে অবশ্যই নির্বাচনী বৈধতা থাকতে হবে, নইলে সেটি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।”
দেশত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি ৫ আগস্ট দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলাম। দেশে থাকলে শুধু আমার নয়, আমার আশপাশের মানুষের জীবনও বিপন্ন হয়ে পড়ত।” তবে তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলেও তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। “শুধু মুক্ত, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনই দেশকে আবার সঠিক পথে ফেরাতে পারে।”
নিজের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি চাই মানুষ আমাকে এমন একজন নেতা হিসেবে মনে রাখুক, যিনি ১৯৯০-এর দশকে সামরিক শাসনের পর দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন এবং লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে উত্তরণে সহায়তা করেছিলেন।”
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এই অর্জনগুলো এখন উল্টে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।”
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর