কুমিল্লার চান্দিনায় সৎ মাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাত সোয়া ১১টায় চান্দিনা উপজেলার বাতাঘাসী ইউনিয়নের সব্দলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হালিমা খাতুন (৩৪) মারা যান। তিনি সব্দলপুর গ্রামের এমদাদুল হক মুন্সির স্ত্রী। ঘাতক শাহিন মুন্সি নিহতের সৎ ছেলে এবং এমদাদ মুন্সির চতুর্থ ছেলে।

জানা যায়, সব্দলপুর গ্রামের এমদাদুল হক মুন্সি (৭৫) এর প্রথম স্ত্রী প্রায় তিন বছর আগে মারা যান। তার চার ছেলে ও তিন মেয়ে সকলেই বিবাহিত। চার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী। ছোট ছেলে শাহিন মুন্সি গত আট মাস আগে দেশে আসে। গত দুই মাস আগে এমদাদ মুন্সি দাউদকান্দির জয়নগর গ্রামের হালিমা খাতুনকে দ্বিতীয় বিবাহ করেন।

এমদাদুল হক মুন্সি জানান, তিনি রাত ১১টায় প্রাকৃতিক ডাকে সারা দিতে শৌচাগারে যান। এ সময় তার স্ত্রী ঘুমাচ্ছিলেন। পাশের কক্ষে ছোট ছেলে শাহিন ছিল। তিনি বাইরে থেকে ঘরে ফিরে দেখেন তার স্ত্রী বিছানায় কাতরাচ্ছেন এবং বিছানা রক্তে রঞ্জিত। তিনি চিৎকার করলে পুত্রবধূসহ অন্যরা ছুটে আসেন। এরপর তিনি অ্যাম্বুলেন্সে করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কাটাস্থানগুলো সেলাই করার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তৃতীয় পুত্রবধূ শিরিনা আক্তার জানান, তারা অন্য ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। তার শ্বশুরের ডাক-চিৎকারে শুনে এসে দেখেন শাহিন ঘর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে এবং তার শ্বশুর কান্নাকাটি করছেন। তার সৎ শাশুড়ি রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিলেন।

বাতাঘাসী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান সিরাজ জানান, এমদাদুল হক মুন্সি তার খুব কাছের আত্মীয়। তাকে দ্বিতীয় বিবাহ করানোর পর পরিবারের কারো কোনো আপত্তি ছিল না। কী কারণে, কেন সৎ মাকে হত্যা করেছে তা কেউ বলতে পারছে না। এ ঘটনার পর শাহিন পালিয়ে যায়।

এদিকে, ঢাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ বাড়িতে আনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে শাহিন মুন্সির ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে তারা মরদেহ উদ্ধার করেছেন। স্বামী এমদাদ মুন্সি বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিচ্ছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মুনতাসির/সাএ