ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বনানী এলাকায় এক সময় আলো-আড্ডা ও রাজনীতিতে মুখর ছিল সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের প্রাসাদ। ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের রাতে ছাত্রজনতার ক্ষোভের আগুনে প্রাসাদটি পুড়ে যায় এবং দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল।
সম্প্রতি বাড়ির চারপাশে নতুন সীমানা প্রাচীর তোলা হয়েছে, গেটে নিরাপত্তারক্ষী এবং ভেতরে কেয়ারটেকার নিয়োজিত রয়েছেন। কেয়ারটেকারের দাবি, ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন ও ভাঙা অংশ মেরামত চলছে, যা পরিবারের নিয়োগকৃত বেসরকারি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান করছে। তবে আদালতের অনুমতি ছাড়াই সংস্কারের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ, কারণ দুর্নীতির মামলায় আদালত আগে তিনটি বাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছিল।
গুলশান লেক পেরিয়ে অল্প দূরত্বে সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বনানী ১৮ নম্বর সড়কের বাড়িও আগুনে পুড়ে ধ্বংসপ্রায়। প্রহরীরা জানাচ্ছেন, ভেতরে আসবাবপত্র ও গাড়ির বেশিরভাগই পুড়ে গেছে বা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাপস সরকারের পতনের আগে দেশ ছেড়ে যান এবং বাড়িটিও এখন কড়া নিরাপত্তায় রয়েছে।
একই চিত্র দেখা যায় শিল্পপতি ও সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের গুলশানের প্রাসাদেও। প্রবেশপথে কড়া নিরাপত্তা, ছবি তোলা নিষিদ্ধ। জানা গেছে, একসময় বাড়ির ড্রয়িংরুমে লিওনার্দো দা ভিঞ্চিসহ বিখ্যাত শিল্পীদের চিত্রকর্ম শোভা পেত, যার বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকারও বেশি। এখন সেগুলোর অস্তিত্বও অনিশ্চিত।
একসময় ক্ষমতার প্রতীক ও রাজনৈতিক দুর্গ হিসেবে পরিচিত এসব প্রাসাদ আজ নিঃসঙ্গ, পোড়া ও পরিত্যক্ত। মালিকরা কেউ কারাগারে, কেউ বিদেশে, আর প্রাসাদগুলো সময়ের সাক্ষী হয়ে নীরবে বলে দিচ্ছে রাজনীতি, ক্ষমতা ও পতনের গল্প।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর