• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
প্রচ্ছদ / রাজনীতি / বিস্তারিত
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০১ নভেম্বর, ২০২৫, ০৯:৩৮ সকাল

দুর্নীতিকে ‘গলা টিপে’ ধরা না গেলে সমাজ বাঁচবে না: জামায়াত আমির

ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতিকে ‘গলা টিপে’ ধরা না গেলে এ সমাজ বাঁচবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এই সমাজ বেঁচে থাকলে একটা ক্ষণভঙ্গুর সমাজ হিসেবে বেঁচে থাকবে। এরকম সমাজ তো কোনো দেশের নাগরিক কামনা করে না।’

যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পথে যুক্তরাজ্যে এক দিনের জন্য যাত্রা বিরতি করেন শফিকুর রহমান। 

শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) লন্ডনের একটি হোটেলে তিনি কয়েকজন সাংবাদিকের মুখোমুখি হন।

বিগত বছরগুলোতে দেশে দুর্নীতি যেভাবে সর্বক্ষেত্রে বিস্তৃতি পেয়েছে, সে কথা বলতে গিয়ে জামায়াত আমির পাকিস্তান আমলের সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতির তুলনা করেন।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, পাকিস্তান আমলে আমরা নিভুনিভু জ্ঞান বুদ্ধি ছিল। তখন কোনো জায়গায় কোনো ঘুষখোর অফিসার আসলে সারা জেলা জেনে যেত যে এই অফিসারটা ঘুষখোর। আর এখন যদি কোনো সৎ অফিসার আসে, সবাই বলে যে এই একটা মানুষ সৎ। দেখেন অবস্থাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

একেবারে পুরা রিভার্স হয়ে গেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। যেই সমাজে দুর্নীতি অনুসঙ্গ হয়ে যায়, নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে যায়, এই সমাজ তারা মাজা সোজা করে দাঁড়াতে পারে না, মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারে না।”

জামায়াত আমির বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাটাও বিধ্বস্ত। আমাদের সেখানে দুর্নীতির ছয়লাব। কোনো জায়গায় নাই সুবিচার। যেখানেই যাবে মানুষ পায় অবিচার। এই অবস্থায় এই দেশ এবং জাতিকে কেউ আর দেখতে চায় না। আমরাও দেখতে চাই না। আপনারাও নিশ্চয়ই দেখতে চান না।’

জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যে বড় পরিবর্তন এসেছে, সে কথা তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এই যে পরিবর্তনটা হল, কীসের প্রত্যাশায়? একটাই প্রত্যাশা যে সমাজে কোনো অনিয়ম এবং বৈষম্য থাকবে না।

আর সকল অনিয়ম এবং বৈষম্যের মূলে হচ্ছে দুর্নীতি। সমাজের সব জায়গায় দুর্নীতিবাজরা বসে থাকার কারণে সমাজে মানুষের যে ন্যায্য অধিকার, এটা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। প্রত্যেকটি মানুষ নিগৃহীত।’

আসন্ন নির্বাচনে প্রবাসীরাও ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে সেখানেও যে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, সে কথা তুলে ধরেন জামায়াত আমির।

তিনি বলেন,‘আপনার কী লাগবে? বার্থ সার্টিফিকেট। কী লাগবে? ইউটিলিটি বিল। আরে, লোকটা তার মানে বছর বছর যুগ যুগ ধরে যে লোকটা এখানে বসবাস করছে, গ্রামে হয়ত আপাতত তার কোনো ঘরবাড়ি নাই। ইউটিলিটি বিল কীসের? তার ওখানে কারেন্ট জ্বলেনা না কারেন্টের বিল সে দিবে? বিল সে দেখাবে?

ওই সুযোগই নাই অনেকের। সেটাও দিতে হবে। বার্থ সার্টিফিকেট আনতে গেলে যে ঢাকা থেকে আনবেন, সে আগে হাত পাতে ভিক্ষুকের মত বসে যে ‘আমাকে কিছু দেন আগে”। না দিলে ঘুরায়। বিভিন্ন ঝামেলা সৃষ্টি করে। ওইটা কী, এইটা কী? হাজার সমস্যা সৃষ্টি করে।’

শফিকুর রহমান বলেন, বিরোধী দলে যারা থাকেন, তারাও দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারে, কিন্তু তার পরিমাণ হয় ‘সীমিত’।

আবার সরকারে গিয়ে যারা সেবা করার সুযোগ পায়, তাদের জন্য অবারিত দ্বার খুলে যায়। যদি সেই মানুষগুলো দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন হয়, যদি তাদের অ্যাকাউন্টেবিলিটি থাকে, দায়বদ্ধতা থাকে সমাজের কাছে, নিজের বিবেকের কাছে, তাহলে তাদের কাছ থেকে সার্ভিস ডেলিভারিটা হয় ওয়ান্ডারফুল।

কিন্তু দায়বদ্ধতা যদি না থাকে, আল্লাহর ভয় যদি না থাকে, দেশের প্রতি ভালোবাসা যদি না থাকে, তাহলে প্রত্যেকটা মানুষ সকল মানুষের পকেট কেটে সে শুধু নিজে বড়লোক হতে চায়। এটাই আমরা দুঃখজনকভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে প্রত্যক্ষ করে আসছি।’

সবাই মিলে এই পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমাদের অনুরোধ যে আমাদেরকে যতক্ষণ ভালো কাজের উপরে দেখবেন, একটু ভালোবাসা আপনাদের আমরা চাইব। একটু সহযোগিতা চাইব।

পাশাপাশি আমাদের যে কাজটা আপনাদের বিবেকের কাছে সঠিক বলে মনে হবে না, সেই জায়গায় আপনাদের সমালোচনাটাও আমরা চাইব। ভালোবাসা, সহযোগিতা মানুষকে আগায় দেয়, কিন্তু সমালোচনা তার চেয়ে বেশি আগায় দেয়।’

প্রবাসীদের আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভোটের অধিকার, আমি বলি যে এটা ভেটো পাওয়ার। এটা যদি আপনার হাতে থাকে, অনেক অধিকার আপনার কাছে চলে আসবে। আর এটা যদি আপনার হাতছাড়া থাকে, তাহলে লোক ওয়ান ওয়ে শুধু আপনার কাছ থেকে নিতে চাইবে, আপনাকে আপনার পাওনাটা দিতে চাইবে না।

প্রবাসীদের ভোটার করার জন্য নিবন্ধনের সময় আরো ১৫ দিন বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর উপস্থিত সাংবদিকদের কয়েকটি প্রশ্নেরও উত্তর দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির।

গুমের মামলায় যে সেনা কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে তাদের বিচার অব্যাহত থাকবে কি না, সেই প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এটা চাই না কারো উপর অবিচার হোক, কিন্তু অপরাধ হলে তার ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ভিকটিমের অবশ্যই আছে। আমরা এই দৃষ্টিকোণ থেকে সকল অবিচারের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচারকে আমরা সমর্থন করি।

আর আমাদের পাঁচটা প্রায়োরিটি ও অঙ্গীকারের মধ্যে একটা হচ্ছে সমাজে সর্বস্তরে ন্যায়বিচার কায়েম করা। সুতরাং ন্যায়বিচার কায়েম করলে আগামীতে যারা অবশ্যই বিচার প্রার্থী হবেন, তারা তাদের ন্যায়বিচার পাবেন, তারা বঞ্চিত হবেন না ইনশাআল্লাহ।’

সরকারি অফিস থেকে বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমানের ছবি অপসারণ নিয়ে এক জামায়াত নেতার যে ফটোকার্ড সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে, সেটি ‘মিথ্যা’ বলে আরেক প্রশ্নের জবাবে জানান দলের আমির।

সংবিধানে বা জুলাই সনদে জিয়াউর রহমানের নাম বা ছবি থাকা উচিত ছিল কি না, এমন প্রশ্নে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আপনি ভালো করে জুলাই... জুলাই সনদ পড়েন। তাকে... সব ব্যাপারে সবাইকে বলা যায় ভাই? সবাইকে তো কিছু কিছু অংশ দিতে হবে যার যেটা পাওনা।

যেমন ধরেন জেনারেল ওসমানী, উনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন। আজকে তাকে কেউ স্মরণ করে? স্বীকার করে? তাকে স্বীকার করা উচিত না? আসম আব্দুর রব প্রথম পতাকা তুলে ধরেছে, তাকে কেউ স্মরণ করে? স্বীকার করে? তার একটা রিকগনিশন পাওয়া উচিত না?

আমাদের অনেক কিছুই অনেক কিছুকে রিকগনাইজ করে না। আল্লাহ যদি আমাদেরকে সুযোগ দেন, যার যেখানে যে অবদান আছে, আমরা কোনো কিছুর উপর অবিচার করবো না ইনশাআল্লাহ।’

একজন সাংবাদিক জামায়াতে ইসলামীর ইশতেহারের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দলটির আমির বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে ইশতেহারের কিছুই তারা প্রকাশ করবেন না। তবে কোনো ‘মিথ্যা আশ্বাস’ তারা জাতিকে দেবেন না।

গণভোট নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্ট্যান্ড ভেরি ক্লিয়ার। গণভোট আগে হতে হবে, নইলে এটা মূল্যহীন। এটার কোনো দুই পয়সার মূল্য নাই।’

যুক্তরাষ্ট্র সফরে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বা মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে কি না, তা জানতে চান একজন সাংবাদিক।

জামায়াত আমির বলেন, ‘জি, আলহামদুলিল্লাহ। অনেক জায়গায় অনেক ওনাদের সাথে কথা হয়েছে। সেটা কোনো দলের জন্য বলি নাই, এটা দেশের জন্য বলেছি। যা ভালো মনে করেছি। আলহামদুলিল্লাহ। এবং তাদেরকে সম্মান দিয়ে বলেছি। আমরাও দুনিয়ার সবার কাছে একটু সম্মান চাই। আর এই সম্মান আমরা পেতে পারি।’

যুক্তরাজ্য জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লাহ এবং সেইভ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]